বিপ্লব মিত্র। —ফাইল চিত্র
খুব শীঘ্রই বিজেপিতে যাচ্ছেন বলে জল্পনা ছড়াচ্ছিল দিনকয়েক ধরেই। বৃহস্পতিবার সেই সম্ভাবনা আরও জোরদার হল। দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র আজ, শুক্রবারই বিজেপিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দিচ্ছেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ সূত্রেই খবর।
যদিও প্রকাশ্যে এই কথা কেউই এ দিন রাত পর্যন্ত স্বীকার করেননি। কিন্তু খোদ বিপ্লব ও তাঁর ভাই তথা গঙ্গারামপুরের পুরপ্রধান প্রশান্ত— দু’জনেরই ফোন বন্ধ থাকায় তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি। এ দিন বিপ্লব বা প্রশান্তকে গঙ্গারামপুর বা বালুরঘাট কোথাও দেখা যায়নি। শোনা যাচ্ছে, আজই দিল্লিতে বা কলকাতায় বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন বিপ্লব। সূত্রের খবর, তাঁর সঙ্গে যোগ দেবেন গঙ্গারামপুর, বুনিয়াদপুর ও বালুরঘাট পুরসভার অধিকাংশ প্রতিনিধি এবং জেলা পরিষদের প্রতিনিধিরা। যদিও বিপ্লবের আর এক ভাই শার্দুল মিত্র জানিয়েছেন, ‘‘এ সবই গুজব। দাদা বাড়িতেই আছেন।’’
তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পর থেকেই বিপ্লবের বিজেপি-যোগদানের জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও তার আগে দল তাঁকে বালুরঘাটে প্রার্থী না করায় প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন বিপ্লব। অভিযোগ, তিনি ভোটে দলীয় প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের হয়ে প্রচারেও তেমন নামেননি। ফলে হারে দায়ভার দিয়ে তাঁকে সরানো হয়। তাঁর জায়গায় জেলা সভানেত্রী করা হয় অর্পিতাকে। এরপর থেকে দলীয় কাজে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে হয়ে যান বিপ্লব। পাশাপাশি, সদলবলে বিজেপিতে যাওয়ার জন্য তিনি তোড়জোড়ও শুরু করে দেন বলে খবর। তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ওই তিন পুরসভার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ ব্যাপারে গোপনে যোগাযোগও রাখছিলেন তিনি। অভিযোগ, এ ব্যাপারে তাঁকে সাহায্য করছিলেন গঙ্গারামপুরের পুরপ্রধান প্রশান্ত। এমনকি, দিনকয়েক ধরে জেলা পরিষদের দলীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গেও ঘনঘন বৈঠক করেন বিপ্লব। এই কারণেই তিনি কলকাতায় কাউন্সিলরদের বৈঠকে গঙ্গারামপুর পুরসভার কোনও প্রতিনিধিকেই পাঠাননি। ঘর গুছিয়ে দল বদলের লক্ষ্যেই তাঁর এ হেন তৎপরতা বলে রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিপ্লব-অনুগামী জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষ বলেন, ‘‘দলের জন্মলগ্ন থেকে জেলায় দলকে প্রতিষ্ঠা করেছেন মেজদা (বিপ্লব)। তাঁর হাত ধরেই এই জেলায় তৃণমূলের সংগঠন তৈরি হয়েছে। আজ তাঁকে বাদ দিয়ে বহিরাগত একজনকে জেলা সভাপতি করে যে ভাবে মেজদাকে অপমানিত করা হল, তাতে মেজদা খুবই মর্মাহত। এই দলে আর সম্মান পাচ্ছেন না। তাই বিজেপি যদি সসম্মানে তাঁকে নেয়, তা হলে তিনি যেতেই পারেন। আমরা সবাই মেজদার সঙ্গে আছি।’’