প্রতীকী ছবি।
শনিবারের বৈঠক। তৃণমূলের কেউ কেউ আবার বলছেন, ‘শনিবারের আড্ডা।’
তৃণমূলের অন্দরমহলের খবর, জেলায় দলকে ‘ধরে রাখতে’ জলপাইগুড়িতে নতুন কৌশল ‘শনিবারের বৈঠক।’ শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দলের সম্পর্ক থাকবে না ধরেই নিয়েছেন নেতা-নেত্রীরা। তার প্রভাব জেলাতেও পড়বে। কানাঘুষো চলছে জেলার তিন তৃণমূল বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিজেপি। দলের কিছু জেলা নেতাও মাঝেমধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন।
এমনই পরিস্থিতিতে ভোটের আগে ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই নেতৃত্ব চাইছেন, জেলা নেতারা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বাড়িয়ে নিতে সপ্তাহে এক দিন অন্তত নিজেরা বসে আলোচনা করুন। সেই কারণেই বিধানসভা ভোটের আগে দলকে ঐকবদ্ধ রাখতে প্রতি শনিবার বিকেলে জেলা তৃণমূল পার্টি অফিসে দলের জেলার কোর কমিটির সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের আলোচনায় বসতে বলেছেন রাজ্য নেতৃত্ব। এই বৈঠকই আপাতত ‘শনিবারের আড্ডা’ নামে নেতাদের মুখে ছড়িয়েছে।
৫ ডিসেম্বর প্রথম বৈঠক হতে চলেছে জেলা পার্টি অফিসে। দলীয় সূত্রে খবর, বিকেল তিনটে থেকে প্রতি শনিবার বৈঠক শুরু হবে। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “দলের নেতারা সপ্তাহে একদিন একসঙ্গে বসে আড্ডা দিক, রাজ্য নেতৃত্ব এমনটাই চাইছেন।”
জলপাইগুড়ি জেলায় তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী কোন্দল’ দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি দলের পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন হয়েছে। তার পরেও ইতিউতি ক্ষোভ বেরিয়ে আসছে। দলের অন্দরমহলের খবর, এক নেতার সঙ্গে আরেক নেতার কথাবার্তাও ইদানীং তেমন হয় না। জেলার এক বিধায়ক জেলা সভাপতির সঙ্গে গত এক মাসে কোনও কথাই বলেননি। আরেক জনপ্রতিনিধি জেলার কোনও কর্মসূচিতে ডাকই পান না। তাঁকে বরাবর পিকে-র টিম আমন্ত্রণ জানায়। ওই নেতা পিকে-র টিমের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে বলেছেন, “দলের কর্মসূচিতে গেলে মনে হয় যেন আমন্ত্রণ ছাড়াই কোনও বিয়েবাড়িতে ঢুকে পড়েছি।”
বিধানসভা ভোটের আগে এই সমন্বয় করতেই শনিবার করতে বৈঠক হতে চলেছে। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “দলে কোনও সমস্যা নেই। আমরা সকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে স্বচ্ছ ভাবে দল করি। জেলা থেকে বুথ স্তরে লাগাতার কর্মসূচি-বৈঠক চলছে।”
আগামী বিধানসভা ভোট পর্যন্ত নেতাদের মধ্যে ‘ভাব’ বজায় রাখতে ডিসেম্বর মাসের পরেও তৃণমূলের ঘরে শনিবারের ‘আড্ডা’ চলতে পারে বলে দলীয় সূত্রে খবর।