ছবি: সংগৃহীত।
মুখবদল কি জলপাইগুড়ি তৃণমূলেও? দল সূত্রে খবর, জেলার একাধিক বিধানসভা আসনে প্রার্থী হিসেবে নতুন মুখ চেয়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন জেলা নেতৃত্ব। ঠিক ক’টি আসনে নতুন মুখ চাওয়া হয়েছে, তা নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে এক তৃণমূল নেতার কথায়, “অন্তত তিনটে আসনে তো নতুন মুখ দেখা যাবে, এটা বলাই যায়।” সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্বের এই প্রস্তাবের সঙ্গে অনেকটাই সহমত পিকে-র টিমও। প্রতি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে পিকে-র দল তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বকে আলাদা ‘নোট’ পাঠিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় সাতটি বিধানসভা আসন রয়েছে। গত বিধানসভা ভোটে জলপাইগুড়ি সদর আসন ছাড়া বাকি সব ক’টিতেই তৃণমূল জেতে। তবে সম্প্রতি নাগরাকাটার বিধায়ক শুক্রা মুন্ডা বিজেপিতে দিয়েছেন। বাকি পাঁচ জনের মধ্যে তিন জনের শিকেয় এ বারে দলের টিকিট না-ও মিলতে পারে, এমনটাই ইঙ্গিত জেলা নেতৃত্বের একাংশের।
কেন নতুন মুখ? তৃণমূলের অন্দরে যুক্তি, গত লোকসভা ভোটের নিরিখে শুধু রাজগঞ্জ বিধানসভায় এগিয়ে ছিল দল। দলের একাংশ বলছে, লোকসভা ভোটের হারের ব্যবধান অতিক্রম করে এ বারে বিধানসভায় জিততে গেলে বাড়তি কিছু ভোট জরুরি। তাই এমন প্রার্থী চাই, যাঁদের অর্থাৎ ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় দশ থেকে পনেরো হাজার বাড়তি ভোট আসবে। পুরনো মুখ না দেখলে অনেক ভোটারের রাগ কমে যাবে বলেও দাবি ওই অংশের।
চর্চার বিষয় অবশ্য আরও আছে। দলের কেউ কেউ বলছেন, এক বিধায়কের আত্মীয় নিয়মিত বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, আর এক বিধায়ক তো বিজেপির নৌকোয় পা রেখেই ফেলেছিলেন বলে চর্চা রয়েছে। এক বিধায়কের বিরুদ্ধে মেজাজ হারিয়ে চড় মারার অভিযোগও রয়েছে। সূত্রের খবর, জেলা নেতৃত্বের পাঠানো প্রস্তাবে প্রার্থী হিসেবে কোনও ব্যক্তির নাম দেওয়া হয়নি। শুধু নতুন মুখের উল্লেখ করা হয়েছে।
এই নিয়ে জেলার কোনও নেতাই মুখ খুলছেন না। তবে কেউ খারিজও করছেন না। জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “এ সব বিষয় নিয়ে কোনও কথা বলব না।” জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর চন্দন ভৌমিকের কথায়, “দল এমন কোনও প্রস্তাব চেয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই। তাই কিছু বলতে পারব না।” রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ের কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মাথায় নিয়েই দল করছি। তিনি যা নির্দেশ দেবেন, তাই হবে।” ধূপগুড়ির তৃণমূল বিধায়ক মিতালী রায়ের কথায়, “প্রার্থী ঠিক করবেন নেত্রী। তিনি কী বলবেন সেটা দেখা যাক।” জেলা নেতৃত্বের একটি সূত্রের বক্তব্য, তাঁদের প্রস্তাবই যে গৃহীত হবে, এমন মানে নেই। রাজ্য নেতৃত্ব নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।