মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি সভাকে পুরোপুরি দলীয় কাজে লাগাতে চায় তৃণমূল। বুধবারই দলের কোচবিহার জেলা কার্যালয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠক থেকে জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক প্ৰত্যেক ব্লক সভাপতিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় লোক আনার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোট ব্লকের ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার, বড় ব্লকের ক্ষেত্রে দশ হাজার মানুষকে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। সে হিসেবে দলীয় চেষ্টাতেই পঞ্চাশ হাজার মানুষকে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় নিয়ে যাওয়া হবে। এর বাইরে সরকারি পরিষেবা নিতে বহু সুবিধাভোগীকে সেখানে হাজির করানো হবে। সব মিলিয়ে লোকসংখ্যা এক লক্ষ পার হবে বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘এটা কোনও দলীয় সভা নয়। সরকারি সভা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তথা আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভা নির্বাচনের মুখে জেলায় আসছেন। তাঁর এই আসাকে আমরা দলীয় ভাবে কাজে লাগাতে চাই। সে ভাবেই আমরা এগোচ্ছি।’’ বিজেপির দাবি, এই মুহূর্তে সরকারি পরিষেবা প্রদানের মাধ্যমে সভা করা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর অন্য কোনও রাস্তা নেই। দলীয় সভা করলে লোক পাবে না রাজ্যের শাসক দল। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি সভাকে রাজনৈতিক কাজে লাগানো ছাড়া তৃণমূলের উপায় নেই। কারণ এমনিতে লোক খুঁজে পাবে না তারা।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর নিয়ে জোরকদমে প্রস্তুতি শুরু করেছে কোচবিহার জেলা প্রশাসনও। প্রত্যেকটি সরকারি প্রকল্প ধরে ধরে সুবিধাভোগীর তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। কোন ব্লক থেকে কত মানুষ আসবেন, সে ক্ষেত্রে তাদের আসার জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা কী হবে সব নিয়েই তৎপরতা শুরু হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি বাস ভাড়া নেওয়ার জন্যে প্রাথমিক ভাবে আলোচনা হয়েছে।
আগামী ২৯ জানুয়ারি কোচবিহারে রাসমেলার মাঠে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে আসার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। কোচবিহারের প্রশাসনিক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে নতুন বাসের সূচনা করার ব্যাপারে ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে প্রস্তাব পাঠিয়েছে এনবিএসটিসি। সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন ডিভিসনে ৪৩টি নতুন বাস চালানো হবে। সে
সব তৈরি রয়েছে।
এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে নতুন বাসের সূচনা করার জন্য সিএমও’তে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” প্রশাসনের তরফেও বিভিন্ন প্রকল্পে উপভক্তাদের তালিকা তৈরির তোড়জোড় চলছে।
সূত্রের খবর, হেরিটেজ শহর ঘোষণা, হেরিটেজ শহরে ঢোকার মুখের স্বাগতম তোরণ, চিলা রায়ের মূর্তির উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। কোচবিহার জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি আব্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সফরের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”