সভায় রহিম। নিজস্ব চিত্র
ফের বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। সোমবার দলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সভায় বিরোধীদের ‘চোখ উপড়ে’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এ দিন দুপুরে মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে তৃণমূলের সরকারি কর্মচারী সংগঠনের সভা হয়। সে সভায় আব্দুর রহিম বলেন, “যুক্ত মঞ্চের নামে আমাদের সংগঠনের কর্মচারীদের চোখ রাঙানো হচ্ছে। তৃণমূল সংগঠনের কর্মচারীদের চোখ দেখালে, সে চোখ উপড়ে নেওয়া হবে। সিপিএম, বিজেপির চোখ রাঙানি আমরা দেখব না।” পরে, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন আব্দুর রহিম বক্সী।
তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে জেলায় রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক অরুণকুমার প্রসাদ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের চোর, ডাকাত বলছেন। এখন তাঁর দলের জেলার নেতারা আমাদের চোখ উপড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি।” রহিমের মন্তব্যের সমালোচনা করে উত্তর মালদহের বিজেপির সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “রহিম বক্সী দলের কাছে নিজের নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। তাই বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রচারে আসার চেষ্টা করছেন।”
বিরোধীদের কটাক্ষকে আমল দিতে নারাজ আব্দুর রহিম বক্সী। তিনি বলেন, “বিরোধীদের কোনও অস্তিত্ব নেই। যুক্ত মঞ্চের আড়ালে বিজেপি, সিপিএমের গুণ্ডারা সরকারি দফতরগুলিতে গিয়ে আমাদের সংগঠনের সরকারি কর্মচারীদের হুমকি, হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। এ দিনের সভায় তাই তাঁদের সাবধান করে দিয়েছি।”
দেড় বছর আগে, মালতীপুরের বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সীকে মালদহে দলের জেলা সভাপতি করে তৃণমূল। তিনি ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আরএসপি-র প্রার্থী ছিলেন। পরে, তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি হয়েই দলের বিভিন্ন সভায় বিতর্কিত মন্তব্য করে একাধিক বার তিনি শিরোনামে আসেন। কখনও বিরোধীদের বেঁধে রাখার ‘হুমকি’, কখনও আবার বিরোধীদের হাত, পা ভেঙে দেওয়ার ‘হুঁশিয়ারি’ দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। এ দিনও দলের সরকারি কর্মচারীদের সাংগঠনিক সভায় তাঁর ‘চোখ উপড়ে’ নেওয়ার হুঁশিয়ারিকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন।