ঘোষণা: কে কে টাকা পাবেন, নাম পড়ছেন রঞ্জন। নিজস্ব চিত্র
যেমন তেমন নয়। একেবারে ২৬ লক্ষ টাকার কাটমানি ফেরাতে চলেছেন ইসলামপুরের তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন মিশ্র।
সাধারণ মানুষের চাপের মুখে পড়ে মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত নিলেন উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের এই কাউন্সিলর। এ দিন সেই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় ওই ওয়ার্ডের মিলনপল্লিতে। রঞ্জন জমি বিক্রি করে টাকা ফেরত দিতে সম্মত হয়েছেন। এটা কি কাটমানি? রঞ্জন জবাবে এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীই তো নাম দিয়েছেন কাটমানি!’’
কীভাবে সম্ভব হল এই বিশাল অঙ্কের টাকা ফেরতের বিষয়টি? রঞ্জন বিজেপি থেকে জিতলেও পরে ফের তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি ফেরতের বিষয়টি ঘোষণা করার পর সম্প্রতি রঞ্জনের বাড়িতে টাকা ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন এলাকার কিছু বাসিন্দা। পুলিশ তখন তাঁকে এটা নিয়ে আলোচনায় বসতেবলে। কিন্তু কাউন্সিলর এরপর বারবার সেই আলোচনা এড়িয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। দিনকয়েক আগে ইসলামপুর পুরসভা চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু তাতেও সমাধানসূত্র মেলেনি বলে অভিযোগ তাঁদের।
সোমবার রাতে মাইকিং করে এ দিন জড়ো হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বাসিন্দারা। এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে এসে টাকা ফেরতের দাবি করেন তাঁরা। কাউন্সিলর বাড়ি ছিলেন না তখন। পরে বিকেল নাগাদ ফেরেন কাউন্সিলর রঞ্জন। সন্ধে ৬টা থেকে বৈঠকের পর টাকা ফেরতের সিদ্ধান্ত হয়। রঞ্জনের হয়ে তাঁর পরিবারের লোকেরা জানান, জমি বিক্রি করে ফিরিয়ে দেওয়া হবে টাকা। এজন্য ৬ মাস সময় চেয়েছেন তাঁরা। যদিও বাসিন্দাদের চাপে তিনমাসের সময় নেওয়া হয়। এরপর আদালতের স্ট্যাম্প পেপারে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখানে স্বাক্ষর করেন রঞ্জনের শ্বশুর ও শ্যালিকা।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সরকারি প্রকল্পে ঘর ও শৌচালয় দেওয়ার নাম করে প্রায় ১০০ জনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা।
ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘উনি (রঞ্জন) টাকা ফেরত দেবেন, ভাল খবর। তবে সব টাকা ফেরত দেওয়ার পরেই উনি পুরসভায় আসবেন।’’ বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘বিজেপিতে থাকলে তো এমন কাজ করতে পারবে না, তাই তৃণমূলে গিয়েছেন। তবে অসৎ উপায়ে যারা লোকের টাকা নেবে তাদের পরিণাম এমনই হবে।’’