ক্যালেন্ডার বিক্রি। নিজস্ব চিত্র।
জেলা পার্টি অফিসের পাশে ফুটপাতে মঞ্চ বেঁধে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাদিবস পালন চলছে। পতাকা তোলা হল, বেদিতে ফুল দেওয়া হল, কেকও কাটা হল। তারপর মঞ্চে বক্তৃতাও শুরু হল। তখনও পাশের রাস্তা দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক। কয়েকজন তৃণমূলকর্মী হাতে রাস্তার একপাশে দাঁড়িয়ে ক্যালেন্ডার বিলি করতে শুরু করতেই জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোডের ছবিটা বদলে যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাঁড়িয়ে থাকা ছবি এবং বড় হরফে ২০২১ লেখা ক্যালেন্ডার নিতে এগিয়ে আসে বহু হাত। রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। কিছুক্ষণের জন্য যান চলাচল থমকে যায়। কেউ টোটো রাস্তাতেই থামিয়ে ক্যালেন্ডার নিতে লাইন দেন কেউ বা বাইক থামিয়ে এগিয়ে গিয়ে কর্মীদের থেকে তৃণমূলের ক্যালেন্ডার চেয়ে নেন। নতুন বছরের পয়লা দিনে তৃণমূলের ক্যালেন্ডার সংগ্রহ করার ভিড় দেখে নেতাদের মুখেও হাসি ফোটে।
পথ চলতিদের দলের ছাপানো ক্যালেন্ডার নিতে কাড়াকাড়ি দেখে মঞ্চ ছেড়ে রাস্তার পাশে চলে যায় জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। আরও বেশি কর্মীকে ক্যালেন্ডার বিলিতে হাত লাগাতে বলেন তিনি। ক্যালেন্ডার সংগ্রহ করার উতসাহ দেখে জেলা তৃণমূলের মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা ভাস্কর সরকার পথ চলতিদের ডেকে তাঁদের হাতে কেকও তুলে দিতে শুরু করেন। জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার বলেন, “মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাপা ক্যালেন্ডার পেতে যে ভাবে ভিড় করেছেন, লাইন করেছেন তাতে বোঝা যাচ্ছে রাজ্যের সাধারণ মানুষ দিদিকে কতটা ভালবাসেন।’’
আমজনতা যখন ক্যালেন্ডার নিতে হুড়োহুড়ি করছে তখন মঞ্চে পুরোদস্তুর রাজনৈতিক ভাষণও চলেছে। জেলা সভাপতি মঞ্চ থেকে বিধানসভা ভোটের প্রচার করেছেন। নেতা-কর্মীদের উৎসাহ দিতে মমতার লড়াইয়ের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন তিনি। আগামনী বিধানসভা ভোটে রাজ্যে তৃণমূল আড়াইশোর বেশি আসন পাবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। একই দাবি করেছেন রাজ্য নেতৃত্বের তরফে জেলায় আসা ওমপ্রকাশ মিশ্রও। এ দিনের সভায় তাতপর্যপূর্ণ ভাবে পুরোনো নেতারাই বক্তব্য রাখেন। পূর্ণপ্রভা বর্মণের পরে দল প্রতিষ্ঠার পরে প্রায় সব ভোটে প্রচার করা বর্তমান কোঅর্ডিনের চন্দন ভৌমিক বক্তব্য রাখেন। তৃণমূলের প্রথম দিকের যুব সভাপতির দায়িত্ব পাবন করা সোমনাথ পাল বক্তব্য রাখেন। এ দিনের সভা শুরু হয় পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন পাপিয়া পালের গান দিয়ে। জলপাইগুড়ি সদর বিধানসভা আসন কোনদিন তৃণমূল পায়নি সে কথাও মঞ্চে বলা হয়েছে। সদর বিধানসভা আসন জেতার ডাক দেন নেতারা।