তৃণমূল প্রার্থী সোনা তোপনো। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েতের ভোটগণনার দিন হেরে যাচ্ছেন বুঝতে পেরে এক গোছা ব্যালট পেপার টেবিল থেকে তুলে খেয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল প্রার্থী মহাদেব মাটির বিরুদ্ধে। এ বার নির্বাচন কমিশনের তরফে বিজেপির বিজয়ী প্রার্থীদের দেওয়া সার্টিফিকেট ছিঁড়ে খেয়ে ফেলার অভিযোগ উঠল শাসকদলের আরও এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে। তিনি সোনা তোপনো। রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ছিল। এই পঞ্চায়েতে বিজেপির ৯ জন এবং তৃণমূলের ৮ জন জয়ী প্রার্থী ছিলেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গন্ডগোল চলছিল। দুপুরে থেকে সেই উত্তেজনা বাড়ে। সমস্ত প্রক্রিয়া শেষে বোর্ড গঠন করে বিজেপি। প্রধান হন রেখা বর্মণ। তবে বিজেপির অভিযোগ, বোর্ড গঠনের সময় দলের জয়ী প্রার্থীদের সার্টিফিকেট কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে দেন শাসকদলের প্রার্থী সোনা। এর পর তিনি ওই ছেঁড়া টুকরোগুলি খেয়ে ফেলেন বলেও অভিযোগ স্থানীয় গেরুয়া নেতৃত্বের। যদিও শাসকদলের তরফে সার্টিফিকেট ছিঁড়ে খেয়ে ফেলার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ওই তৃণমূল প্রার্থীকে গ্রেফতারের দাবিতে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে দীর্ঘ ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মীরা।
বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া শেষে বিজেপির সদ্য নির্বাচিত উপপ্রধান দুলাল সরকার তৃণমূলের ওই সদস্যের বিরুদ্ধে সরকারি কাগজ ছিঁড়ে খেয়ে ফেলার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জিতে যাওয়ার পর সার্টিফিকেট কেড়ে নেয় তৃণমূলের সদস্যরা। তখন আমাদের সঙ্গে ওদের ধস্তাধস্তি হয়। কাগজ ছিঁড়ে দেয়। তৃণমূলের প্রার্থী সোনা এসে সেই কাগজ খেয়ে ফেলে। আমরা শেষরক্ষা করতে পারিনি। তবে আমাদেরই বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।’’
অন্য দিকে, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন সোনা। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপির তোলা অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন। বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। সরকারি কাগজ খেলে কেউ দেখতে পেত না?’’
উল্টে বিজেপি এবং বোর্ড গঠনের দায়িত্বে থাকা সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, তৃণমূলের সদস্যদের ভোটে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়নি। যদিও সমস্ত বিষয়টি ঊর্ধ্বতন প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোর্ড গঠনের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং অফিসার।
এই প্রসঙ্গে, রায়গঞ্জের বিডিও শুভজিৎ মণ্ডল জানান, রায়গঞ্জ ব্লকের ৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই সুষ্ঠু ভাবে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে সরকারি কাগজ ছিঁড়ে ফেলা বা খেয়ে নেওয়ার কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।