নারকেল ফাটিয়ে রাস্তার শিলান্যাসে বিজেপি। —নিজস্ব চিত্র।
কে করবে রাস্তার শিলান্যাস। তাই নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে দড়ি টানাটানি। নারকেল ফাটিয়ে রাস্তার উদ্বোধন করতে গিয়ে পুরাতন মালদহে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপির সাংসদ থেকে বিধায়ক।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পথশ্রী প্রকল্পে পাওয়া একটি রাস্তার শিলান্যাস নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা শুরু হয়েছিল। শনিবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল মালদহে। পুরাতন মালদহ ব্লক প্রশাসন এবং পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে ‘অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ ও উপজাতি উন্নয়ন’ তহবিল থেকে ভাবুক অঞ্চলের কুতুবপুর এলাকায় ৮ জুলাই এক কিলোমিটার দীর্ঘ কংক্রিটের ঢালাই একটি রাস্তার সূচনা করেন তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের সদস্য নাইকি হাঁসদা। জানা গিয়েছিল, ওই রাস্তা তৈরিতে খরচ হয়েছে ৪৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু, ছ’দিন আগে শিলান্যাস হয়ে যাওয়া রাস্তার আবার উদ্বোধন হল। এ বার হাজির বিজেপি পরিচালিত পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রুম্পা রাজবংশী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ খগেন মুর্মু এবং মালদহ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা। তার পরেই গন্ডগোলের শুরু।
একই রাস্তার বার বার কেন শিলান্যাস? এই প্রশ্ন করে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বিজেপি সাংসদ, বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন। পাল্টা গ্রামবাসীদের উপর মেজাজ হারান সাংসদ। শুরু হয় কথা কাটাকাটি।
পথ-বিতর্কে বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রুম্পার মন্তব্য, ‘‘তৃণমূল কী করল বা করল না, সেটা আমরা বলতে পারব না। কী কারণে তারা এসে আগে শিলান্যাস করল, সেটা তাদের জিজ্ঞাসা করুন। কারণ, এই প্রকল্পটা হল ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে।’’ পাল্টা তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য নাইকির দাবি, ‘‘যে রাস্তাটা আজ (শনিবার) বিজেপি শিলান্যাস করল, সেটা তৃণমূল সরকার অনুমোদন করেছে। তাই আমাদের শিলান্যাস করা রাস্তা কী ভাবে বিজেপি উদ্বোধন করতে পারে?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সাংসদ খগেন মুর্মু পাঁচ বছরে কোনও উন্নয়ন করেননি। যার কারণে তিনি এলাকায় গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন।’’ গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের নেপথ্যে তৃণমূলের ইন্ধন দেখছে বিজেপি। সাংসদ যদিও বিক্ষোভের কথা স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘‘আমি উত্তেজিত হয়ে কিছু কথা বলেছিলাম। পরে গ্রামবাসীরা ভুল স্বীকার করেছেন।’’ কিন্তু এক রাস্তার কেন বার বার শিলান্যাসের প্রয়োজন পড়ে, তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গ্রামবাসীরা।