সংগ্রহ: নদী থেকে এ ভাবেই তোলা হয় কাঠ। নিজস্ব চিত্র
বর্ষা আসতেই ডুয়ার্সে বেড়েছে কাঠ মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। টানা বৃষ্টির সুযোগে মাফিয়ারা জঙ্গলে ঢুকে কাঠ কেটে নদীপথে পাচার করছে বলে অভিযোগ। বর্ষায় ডুয়ার্সের নদীগুলোর জল ফুলেফেঁপে ওঠে। জঙ্গলে কাঠ কেটে মাফিয়ারা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। নির্দিষ্ট জায়গায় তাদের লোকজন নদী থেকে সেই কাঠ তুলে নেয়। লাগাতার কয়েক বছর ধরে বর্ষার মরসুমে কাঠ পাচার বাড়ায় উদ্বিগ্ন বন দফতরের কর্তারা।
বর্ষায় কাঠ পাচারে লাগাম টানতে এ বার সচেষ্ট বনকর্তারা। নদীর ধারে নজরদারি রাখতে শুরু করা হয়েছে রিভার ক্যাম্প। তাছাড়া, জলদাপাড়া ও বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বিভিন্ন নদীতে রবারের বোট নিয়ে নজরদারি চালাচ্ছেন বনকর্মীরা। রাজ্যের বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, ‘‘বর্ষার সময় নদীপথে কাঠ পাচার হচ্ছে বলে খবর রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বনকর্তাদের সর্তক করেছি। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ এক বনকর্মী জানান, বড় বড় শাল-সেগুনের গুঁড়ি কেটে ভেলা বানানো হয়। অনেক সময় সেই ভেলার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া গাড়ির চাকার বড় বড় টিউব। হাওয়াভর্তি টিউবগুলোই ভারী কাঠের গুঁড়িগুলোকে জলে ভাসিয়ে রাখে। জলের স্রোত সহজেই ভেলাগুলোকে বহুদূর ভাসিয়ে নিয়ে যায়। আর নদীর পাশ দিয়ে যায় পাচারকারীরা। নির্দিষ্ট জায়গায় আগেই প্রস্তুত থাকে তাদের লোকজন। কোমরে দড়ি বেঁধে জলে নেমে সেই কাঠের ভেলা ডাঙায় তোলে তারা।
জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল জানান, পাচার রুখতে তোর্সা নদীতে চারটি রবারের বোট রাখা হয়েছে। নদীর ধারে ওয়াচটাওয়ার থেকে নদীতে নজরদারি চলে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পূর্ব ডিভিশনের ডিএফডি শ্রী হাতিশ জানান, ‘‘রায়ডাক ও সঙ্কোশ নদীতে বেশ কয়েকটি রিভার ক্যাম্প করা হয়েছে। পশ্চিম ডিভিশনের ডিএফডি কল্যাণ রাই জানান, কালজানি, ডিমা ও গরম নদীর ধারে বিভিন্ন জায়গায় রিভার ক্যাম্প রয়েছে। বৃষ্টিতে বনকর্মীরা সেখানে বসে নদীতে নজরদারি চালান। রবারের বোটেও নদী পথে নজরদারি চলে।
তবে পরিবেশকর্মীরা জানান, প্রতিদিন বহু কাঠের গুঁড়ি নদীপথে জঙ্গল থেকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বনকর্মীদের নজরদারি বাড়লে নদীতেই ভারী কিছু দিয়ে কাঠগুলোকে ডুবিয়ে রাখা হয়। বনকর্মীদের নজরদারি শিথিল হলে তারপর তা নদী থেকে কাঠ তোলা হয়।