টাইগার হিলের দর্শকদের বসার ব্যবস্থার প্রস্তাবিত নকশা। —নিজস্ব চিত্র।
নতুন করে সাজছে দার্জিলিং পাহাড়ে পর্যটকদের অতি প্রিয় টাইগার হিল। নতুন অবজ়ারভেটরি বা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শুরু হবে পুজোর পরেই। জানা গিয়েছে, নতুন এই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে সূর্যোদয় ও কাঞ্চনজঙ্ঘাকে আরও ভাল করে দেখা যাবে। জিটিএ (গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ইতিমধ্যে দশ বছর আগে জিটিএ-র তরফেই শুরু হওয়া নির্মীয়মাণ ভবনটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। উল্লেখ্য, টাইগার হিলে কয়েক বছর আগে পর্যটন দফতরের তরফে কিছু কটেজ তৈরির কথা ভাবা হয়। কিন্তু তা পরিবেশের ক্ষতি করতে পারে বলে ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালে অভিযোগও দায়ের করা হয়। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের সেই অভিযোগ নিয়ে পরিবেশ আদালতও নির্মাণ নিয়ে সতর্কতা রক্ষার নির্দেশ দেয়।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পরিবেশগত দিকগুলো দেখে নিয়েই নতুন কাজের সিদ্ধান্ত হয়েছে। অবজ়ারভেটরি নিয়ে আদালত আলাদা করে কিছু বলেনি বলে জিটিএ-র দাবি। এর আগে, ২০১৪ সালে টাইগার হিলে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচে ওই নির্মাণের গুণমান এবং কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তাই নতুন ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত। গত জুলাইয়ে জিটিএ-র বোর্ড সভায় নতুন সিদ্ধান্তের পরে সম্প্রতি তা প্রশাসনিক ছাড়পত্র মিলেছে। নতুন প্রকল্পে ভিউ গ্যালারি, ডেক, লিফ্ট, সেন্ট্রাল হিটিং সিস্টেম, রেস্তরাঁ, ক্যাফেটেরিয়া, যোগা ও ওয়েলনেস সেন্টার, গাড়়িচালকদের বিশ্রামাগার-সহ একাধিক পরিকাঠামো তৈরি হবে। ভবনের মাথার অংশে টেলিস্কোপও বসানোর কথা রয়েছে। ভবনটির মাথায় একটি বুদ্ধমূর্তি বসানো নিয়েও আলোচনা চলছে। থাকছে এক থেকে দেড় হাডার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
জিটিএ-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘পুরনো কাজটির গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ছিল। প্রশাসনিক ছাড়পত্র নিয়ে কিছু অসুবিধা হয়। সূর্যোদয়ের দৃশ্যমানতা শীতে ঢাকা পড়ার আশঙ্কা ছিল। তাই পুরনো নির্মাণ ভাঙা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, নতুন প্রকল্পের কাজ পুজোর মরসুমের পর থেকে পুরোদমে শুরু হবে।
বিমল গুরুং জিটিএ প্রধান থাকার সময় আগের ভবনের কাজ শুরু হয়। প্রায় ২ কোটি টাকার কাজও হয়। কিন্তু বর্তমান বোর্ডের তরফে কাজের ধরন, মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে কাজ বাতিল করা হয়। এর পরে নতুন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জিটিএ-র আধিকারিকেরা জানান, পুরনো ভবনের নকশাতেই গলদ ছিল। শীতের সময় সূর্যোদয়ের দৃশ্য ঢেকে যাচ্ছিল। পাশাপাশি, নির্মাণের একাংশ দুর্বল ছিল বলেও অভিযোগ। বিমল গুরুং বা পুরনো জিটিএ-র বোর্ডের তরফে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।