ঘটনায় আহত সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। নিজস্ব চিত্র।
তারস্বরে মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করায় প্রহৃত হলেন দুই সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ ৩ জন। রবিবার সকালে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানার খাঁপুরের কইগ্রাম এলাকার ঘটনা। এলাকায় চলা পুজোর উদ্যোক্তা পাড়ারই কয়েক জন যুবকের লোহার রড ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম সিভিক ভলান্টিয়ার জয়দেব বর্মন এবং স্থানীয় যুবক শ্যামল সিংহকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। কিন্তু আক্রান্তদের অভিযোগ, তার পরে ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও পুলিশের তরফে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড়ার মোড়ে কিছু ছেলে শনিপুজো উপলক্ষে সারা রাত মাইকে গান বাজায়। রবিবার সকালেও মাইক বন্ধ হয়নি। রাতে তাঁদের ঘুম হয়নি। ফলে সকালে মাইক বন্ধের জন্য কয়েক জন বাসিন্দা ওই ছেলেদের কাছে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। সে সময় ডিউটি সেরে ওই কইগ্রামেরই বাসিন্দা সিভিক ভলান্টিয়ার জয়দেব ও অমিত বাড়ি ফিরছিল। সে সময় তারাও বাসিন্দাদের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ জানালে অভিযুক্তরা চড়াও হয়।
এ দিন বালুরঘাট থানার আইসি বিপুল বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘ওই সিভিক ভলান্টিয়ারেরাও পাড়ার ওই পুজোয় সামিল ছিলেন। রাতে নেশা করে তারা দু’দলে ভাগ হয়ে মারপিটে জড়ায়। মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করে তাদের মারধর করা হয়েছে, সে কথা ঠিক নয়।’’
যদিও আক্রান্তদের অভিযোগ, মাথায় রড দিয়ে আঘাত করায় তার মাথায় সেলাই পড়েছে। শ্যামলের কান কেটে গিয়েছে। অমিত সরকার নামে জখম আর এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পর অমিত বালুরঘাট থানায় অভিযুক্ত বংশী ওঁরাও-সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
তৃণমূলের বালুরঘাট ব্লক সভাপতি বিভাস চট্টোপাধ্যায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পাড়ায় বদনাম রয়েছে বলে জানিয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ কেন বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি, তা দেখব।’’ ঘটনার কথা শুনে জেলা পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ এ দিন হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে জখম সিভিক ভলান্টিয়ার জয়দেব বর্মন বলেন, ‘‘শনিবার রাতে খাঁপুর এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে ডিউটি ছিল। ডিউটি সেরে ভোরে আমি ও অমিত কইগ্রামে বাড়ি ফিরছিলাম। সে সময় পাড়ার মোড়ে মাইক বাজানো নিয়ে গন্ডগোল হচ্ছিল। আমরা প্রতিবাদ করলে দল বেঁধে ওরা চড়াও হয়।’’ এ দিন অভিযুক্তদের কাউকে এলাকায় দেখা যায়নি। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পাড়ার ওই দলটি মাঝে মধ্যে নেশা করে এলাকা দাপায়। কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করেন না। প্রতিবাদী জয়দেবদের ওই পরিস্থিতির পরেও পুলিশ পদক্ষেপ না করায় এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।