মাটিগাড়ায় এই বিক্ষোভ ঘিরেই উত্হতেজনা ছড়ায়। —ফাইল চিত্র
মাটিগাড়া-কাণ্ডে বিভাগীয় তদন্তে থানা থেকে সরানো হল তিন পুলিশকর্মী ও দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে। বৃহস্পতিবার রাতে এই সিদ্ধান্ত নেন শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের কর্তারা। পুলিশ সূত্রের খবর, রাতেই তিন পুলিশকর্মীকে মাল্লাগুড়ি পুলিশ লাইনে ‘ক্লোজ’ করা হয়। দু’জন সিভিককেও সেখানে সরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার সময় থানার ‘পিসি পার্টি’ হিসেবে তাঁরাই বেআইনি মদ বিক্রির অভিযোগে বেচন রায়কে কলাইবক্তারি থেকে থানায় নিয়ে এসেছিলেন। নজরদারির প্রশ্নে ডিউটি অফিসার ও ওসি-র বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হল না কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছে পুলিশের একাংশ।
পুলিশকর্তারা জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চতুর্থ মহানন্দা সেতুতে আগুন নিয়ে পুলিশের দিকে তেড়ে যাওয়া এবং রাস্তা অবরোধের জন্য একটি মামলাও দায়ের করা হচ্ছে। বেচন রায় নামে কলাইবক্তারির অভিযুক্ত ওই মদ বিক্রেতাকে বুধবার দুপুরে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। বেচনের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ ঘুষ চেয়েছিল ও তা দিতে দেরি লকআপে পিটিয়ে মারা হয়েছে বেচনকে। যদিও ঘটনার দিন থেকেই ঘুষ চাওয়া এবং মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবারেই পুলিশকর্তারা জানিয়েছিলেন, এই ঘটনায় একটি বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হবে। সে দিন দুপুরে মাটিগাড়া থানাতেও যান শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্ব। তার পরেই ওই সিদ্ধান্ত হয়। শুক্রবার শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পশ্চিম) কুমার ভূষণ সিংহ বলেন, ‘‘ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন মোট পাঁচ জন। বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। আপাতত পাঁচ জনকে থানা থেকে সরিয়ে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রের দাবি, ‘পিসি পার্টি’র দায়িত্বে থাকা তিন পুলিশকর্মী ও দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার থানায় থাকলে তদন্তের কাজে অসুবিধা হতে পারে বলে তাঁদের সরানো হয়েছে। পুলিশকর্তারা জানান, ঘটনার সময় কী হয়েছিল তা থানার সিসিক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানার চেষ্টা চলছে। সেই সঙ্গে ঘটনার সময় থানার ওসির ভূমিকা বা নজরদারি কী ছিল, ডিউটি অফিসার কী করছিলেন তা-ও দেখা হচ্ছে। কারণ, থানার বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও লকআপে সিসিক্যামেরা রয়েছে। সেগুলির টানা ‘লাইভ ফুটেজ’ ওসি ছাড়াও ডিউটি অফিসারের দেখার কথা। ফলে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দেহ নিয়ে বিস্তর ঝামেলার পরে বিকেলে দেহ হাতে পায় বেচনের পরিবার। শুক্রবার বেচনের দেহের সৎকার করে পরিবার।