চিতাবাঘের চামড়া পাচারের সূত্র ধরে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। নিজস্ব চিত্র
চিতাবাঘ মেরে তার মাংস রান্না করে খাওয়া, সেই ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এবং তারও পরে তার চামড়া বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন তিন যুবক। জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়া ব্লকের ঘোষপুকুরের ফৌজিজোত এলাকায় সীমা সুরক্ষা বল বা এসএসবি এবং ঘোষপুকুর রেঞ্জের বন কর্মীরা যৌথ অভিযান চালিয়ে দু’জনকে আটক করে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও একজনের হদিশ মেলে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় চিতাবাঘের পা। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটবে তা বন দফতরও ভেবে উঠতে পারেনি। গোটা দফতর হতবাক।
মানুষ সবই পারে। ঘোষপুকুর বন বিভাগের রেঞ্জার সোনম ভুটিয়ার কথায় অন্তত তাই মনে হয়। সোনাম ভুটিয়ার বক্তব্য, সপ্তাহ দেড়েক আগে নেট মাধ্যমে মৃত চিতাবাঘের ছবি ভাইরাল হয়। এর মধ্যে ঘোষপুকুর রেঞ্জের কাছে সীমা সুরক্ষা বল মারফত খবর আসে যে, চিতাবাঘের চামড়া পাচার করার চেষ্টা করছেন কয়েকজন। সেই মোতাবেক ফৌজিজোত এলাকায় যৌথ অভিযান চালান তাঁরা। তার পর চিতাবাঘের চামড়া-সহ দু’জনকে আটক করে বন বিভাগ। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় চিতাবাঘের কাঁচা চামড়া। যা ৮০ হাজার টাকায় নেপালে পাচার হচ্ছিল বলে অভিযোগ। পরে অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অন্য দিকে, এই কাঁচা চামড়া উদ্ধার হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নেট মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবির সত্যতা প্রকাশ্যে আসে। ধৃত দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ভাইরাল হওয়া ছবিতে উপস্থিত আরও এক যুবকের হদিশ মেলে। বারোপুটিয়া এলাকা থেকে তাঁকেও হাতেনাতে ধরে ফেলেন বন দফতরের কর্মীরা। তাঁর কাছ থেকে চিতাবাঘের পায়ের থাবা ও একটি বাইক উদ্ধার হয়।
রেঞ্জার সোনম ভুটিয়া জানান, চিতা বাঘটিকে মারা হয়েছে না চিতা বাঘটি মৃত ছিল তা এখনও জানা যায়নি। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন তাঁরা। চা বাগান এলাকায় চিতাবাঘ মারা গেলে এলাকাবাসীরাই বন দফতরকে খবর দেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এমনটা হয়নি। প্রথম ছবি ভাইরাল হয়।
অন্য দিকে, চিতাবাঘের মাংস রান্না করে খাওয়া হয়েছে। যা আগে এই এলাকার কেউ কখনও শোনেননি। ধৃতদের মধ্যে একজন মালবাজারের রানিচিরা চা বাগানের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। অন্য দু’জন ফাঁসিদেওয়ার বারোপুটিয়া রাই লাইন এবং কমলা বাগানের পিতালুস খেড়কাট্টা এলাকার বাসিন্দা। উদ্ধার হওয়া এই চিতাবাঘের চামড়া লম্বায় প্রায় ১১০ সেন্টিমিটার এবং চওড়ায় ৬০ সেন্টিমিটার। বন বিভাগের প্রাথমিক অনুমান, মৃত চিতাবাঘটির বয়স তিন বছর। শনিবার ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে তোলার কথা। গোটা ঘটনার তদন্তে নেমেছে ঘোষপুকুর বন বিভাগ।