রবিবার পাসাং লামার বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া কাঠ। (ইনসেটে পাসাং লামা) নিজস্ব চিত্র।
টানা তিন দিন আত্মগোপন করে থাকার পর অবশেষে পুলিশের জালে তৃণমূলের কালচিনি ব্লক সভাপতি পাসাং লামা। রবিবার সন্ধ্যায় বীরপাড়ায় জলপাইগুড়ি সীমানা লাগোয়া এলাকা থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। এর আগে এ দিন পাসাংয়ের খোঁজে তাঁর বাড়িতে যাওয়া পুলিশের উপরে তৃণমূল নেতার কিছু লোক হামলা চালায় বলে অভিযোগ। আজ, সোমবার পাসাংকে আদালতে তোলা হবে।
আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “পাসাং লামা নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কাঠ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে পাসাংয়ের বিরুদ্ধে অনেকগুলি মামলা হয়েছে। ২০১৮ সালে কাঠ পাচারে বাধা দিতে গেলে বনকর্মীদের উপর চড়াও হওয়া ও সরকারি কাজে বাধা, এমনকি খুনের চেষ্টারও অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। যার জেরে সম্প্রতি পাসাংয়ের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারকে বলেন, “কালচিনিতে একজন সব হেরিটেজ বিক্রি করে দিচ্ছে। ওকে দ্রুত গ্রেফতার করবেন।”
পুলিশ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের পর সে দিন গভীর রাতে কালচিনি থানার পুলিশ ও বন দফতর যৌথভাবে পাসাংয়ের খোঁজে তাঁর ও তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে হানা দিয়ে প্রচুর চোরাই কাঠ বাজেয়াপ্ত করে। এ দিন সকালে পাসাংয়ের খোঁজে কালচিনির ট্রলি লাইনের বাড়িতে ফের হানা দিয়ে আরও প্রচুর চোরাই কাঠ বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ ও বন দফতর। অভিযোগ, সেই সময় বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গেলে পুলিশের উপর হামলা হয়। আলিপুরদুয়ারের এসডিপিএ দেবাশিস চক্রবর্তীর নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী গিয়ে বাকি পুলিশ কর্মীদের উদ্ধার করেন। পুলিশের এক আধিকারিকের অভিযোগ, “এই ঘটনাও পাসাংয়ের ইন্ধনে হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এরই মধ্যে এ দিন সন্ধ্যায় মাদারিহাট থেকে জলপাইগুড়ির দিকে পালানোর চেষ্টার সময় বীরপাড়ায় পাসাং পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যায়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে।” বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ বলেন, “পাসাং গ্রেফতার হয়েছে ভাল। কিন্তু আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলে এমন অনেক পাসাং রয়েছেন, যারা কাঠ ও বালি পাচারে যুক্ত। মুখ্যমন্ত্রী বা পুলিশ তা জানেন না, সেটা বিশ্বাস করি না।”