Student

Toto: ভরসা টোটা, সংসারের স্টিয়ারিং আব্দুলের হাতে

শহরের কাছেই টাকাগাছে আব্দুলের বাড়ি। তিন ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই কাজের জন্যে বাইরে থাকেন। ছোট দুই ভাই বাড়িতেই।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৫০
Share:

টোটোতে আব্দুল। নিজস্ব চিত্র।

বাবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত। কর্মশক্তিহীন। লেখাপড়ার ইচ্ছে থাকলেও তাই সংসারের হাল ধরতে টোটো চালানো শুরু করেছে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল। কোচবিহারের টাকাগাছের বাসিন্দা আব্দুল হোসেনের কথায়, “বাবাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। সংসারেও তো টাকা প্রয়োজন। তাই টোটো চালানো শুরু করেছি। পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করছি।” সে জানিয়েছে, দিন কয়েক টোটো চালিয়ে হাত পাকা করে নিয়েছে সে। এর পরেই বাইরে বেরোতে শুরু করে। পড়াশোনা সেরে, খাওয়াদাওয়ার পরে সকাল ১০টা নাগাদ টোটো নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে আব্দুল। দুপুর পর্যন্ত টোটো চালিয়ে বাড়িতে ফেরে। আবার বিকেলে বেড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার আগে আগে বাড়ি ফিরে আসে সে। রাতে ফের বই নিয়ে পড়তে বসে। তাঁর কথায়, “অনেক দিন তো স্কুল বন্ধ। পড়াশোনা ছাড়িনি। কাজের সঙ্গে পড়াটাও চালাচ্ছি। এক জন শিক্ষক সাহায্য করেন।”

Advertisement

শহরের কাছেই টাকাগাছে আব্দুলের বাড়ি। তিন ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই কাজের জন্যে বাইরে থাকেন। ছোট দুই ভাই বাড়িতেই। দু’জনেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। আব্দুল জানান, সে রামভোলা স্কুলে পড়াশোনা করে। তাঁর বাবা জহিরুল মিয়াঁ একাই সংসার চালাতেন। কিছু দিন আগে তিনি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন। প্রথমে কোচবিহারেই তাঁর চিকিৎসা হয়। পরে অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে বেঙ্গালুরুতে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয় তাঁর। অসুস্থতার কারণে বর্তমানে তিনি বাড়িতেই থাকেন। তাঁরই টোটো চালাতে শুরু করেন ছেলেরা। আবার ফেব্রুয়ারি মাসে শারীরিক পরীক্ষার জন্য বেঙ্গালুরু নিয়ে যেতে হবে জহিরুলকে। তার জন্যেই অনেক টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা কী ভাবে রোজগার হবে তা নিয়েও নিয়মিত ভাবতে হচ্ছে পরিবারের সবাইকে। তার মধ্যেই পড়াশোনা ধরে রেখেছে আব্দুল। সে বলে, “পড়াশোনা শিখে যদি একটা ভাল কাজ পাই, তাহলে তো অনেক সমস্যার সমাধান হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement