জয়ীতা গোস্বামী
দীর্ঘ দেড় বছর ধরে করোনা আবহ ও বিধিনিষেধে মানসিকভাবে অনেকে বিধ্বস্ত। দীর্ঘ সময় বাড়িতে বন্দি থাকায় ছেলেমেয়ের পড়াশোনা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকেরা। বাচ্চাদের পাশাপাশি বাবা-মায়ের অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ার মতো ঘটনা ক্রমেই সামনে আসছে। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এসেছেন বালুরঘাটের মনোবিদ জয়ীতা গোস্বামী। বিনা পারিশ্রমিকে তিনি কাউন্সেলিং করে চলেছেন।
শহরের রথতলার বাসিন্দা জয়ীতা পেশায় মনোবিদ বিশেষজ্ঞ। বালুরঘাট কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে অবসাদগ্রস্ত বন্দিদের তিনি নিয়মিত কাউন্সেলিং করেন। পাশাপাশি বালুরঘাট শহরে তিনি পারিশ্রমিকে এই পেশায় যুক্ত। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে তিনি সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে ওই কাজ করে চলেছেন।
অবসাদগ্রস্ত স্বামী-স্ত্রী থেকে গৃহবন্দি হতাশ শিশুদের দিকেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। জয়ীতাদেবীর কথায়, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ নাজেহাল। এই অবস্থায় অনেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছেন। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য দেখা যাচ্ছে। বাচ্চাদের পড়াশোনা নিয়ে চিন্তিত বাবা-মা। অনলাইনে ক্লাস করতে গিয়ে বাচ্চারা মোবাইল আসক্ত হয়ে পড়ছে। অনেকেই অ্যালকোহলে আসক্ত হয়ে পড়ছেন। যতটা সম্ভব কাউন্সেলিং করে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘শুধু পুরুষই নন, মহিলারাও সমানভাবে মানসিক অবসাদে ভুগছেন। বিনামূল্যে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। অনেকে সুফল পাচ্ছেন।’’
দীর্ঘদিন এই পেশায় যুক্ত জয়ীতা কোভিড পরবর্তী সময়ে ইতিমধ্যে ৬৪ জনকে কাউন্সেলিং করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘অনেকেই সংকোচে প্রথমে আসতে চান না। কিন্তু যারা সুফল পাচ্ছেন, তাদের কাছে শুনে অনেকেই আসছেন।’’ কোভিড পরিস্থিতিতে বর্তমানে তিনি অনলাইনে বা ফোনে কাউন্সেলিং করছেন। অবসাদগ্রস্ত মানুষকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফেরাতে এ ভাবেই বিনা পারিশ্রমিকে কাজ চালিয়ে যেতে চান জয়ীতা।