প্রতীকী ছবি।
সিকিমের ঋষিতে স্থায়ী নম্বরপ্লেট না হওয়া নতুন গাড়ি খাদে পড়ে ৫ জন বাঙালি পর্যটকের মৃত্যুর কারণেই নড়েচড়ে বসেছে ওই সংগঠনগুলি। পাহাড়ে গাড়ি ভাড়া করে ঘুরতে বার হওয়ার আগে পর্যটকদের বেশ কয়েকটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে—সেগুলো কি, তা নিয়ে লাগাতার প্রচারে নামছে পাহাড় ও সমতলের ট্যুর অপারেটরদের একাধিক সংগঠন। ইতিমধ্যেই ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (ইটোয়া) নিজেদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তা নিয়ে প্রচার শুরু করেছে।
এমনকি, সংগঠনগুলির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম উভয় রাজ্যের পর্যটন দফতরের কাছেও পাহাড়ে গাড়ি চালানোর খুঁটিনাটি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণের আর্জি জানানো হয়েছে।
ইটোয়ার সভাপতি দেবাশিস মৈত্র বলেন, ‘‘বছর পাঁচেক আগে পাহাড়ে গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যাপারে মৈনাক অতিথি নিবাসে পর্যটন দফতর একটি বৈঠক করে। সেখানে কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তার পরে ওই বিষয়ে কোনও কাজই হয়নি। এ বার যাতে সত্যিই প্রশিক্ষণ হয় সেটা পরিবহণ দফতরকে দেখতে হবে।’’ ট্যুর অপারেটরদের তরফে রাজ্য পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (এসটিএ) হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে। তবে রাজ্যের পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, দার্জিলিং পাহাড়ে গাড়ি চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রস্তাব কী ভাবে বাস্তবায়িত করা যায় তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে।
কিন্তু, সিকিমের গাড়ি চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে কী ভাবে?
সিকিম পরিবহণ দফতরের এক অফিসার জানান, লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও চালকদের অনেকে পাহাড়ি বাঁকে আচমকা মুখোমুখি গাড়ি চলে এলে অথবা হঠাৎ কুয়াশার মধ্যে পড়লে কী ভাবে ঠান্ডা মাথায় গাড়ি চালাতে হবে, সেই প্রশিক্ষণ সত্যিই জরুরি। ওই অফিসার এটাও জানান, পাহাড়ের দুর্গম চড়াই-উৎরাইয়ে ‘ওভারটেক’ না করে উপত্যকা এলাকার জন্য অপেক্ষা করার ধৈর্য্যও রাখতে হবে। সে জন্য সিকিম পরিবহণ দফতরও চলতি সপ্তাহেই স্থানীয় ট্যুর অপারেটরদের নিয়ে বৈঠকে বসার আশ্বাস দিয়েছে।
কোনও কোনও ক্ষেত্রে দ্রুত রোজগারের জন্য অনেক সময় ঠিক মতো প্রশিক্ষণের আগেই অনেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। গাড়ি চালকেরাও উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নেই এমন চালকের হাতে গাড়ি তুলে দেন।
পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম, দুই রাজ্যের পাহাড়ের গাড়ি চালক ও মালিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকেও পর্যটকদের কয়েকটি ব্যাপারে খেয়াল রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গাড়ির ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’, চালকের লাইসেন্স কত দিনের ও তাতে বেপরোয়া চালানোর জন্য জরিমানা হয়েছে কি না, সেটা অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।
পাহাড়ে গাড়ি ভাড়া নেওয়ার আগে যা নজরে রাখতে হবে
চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স কত দিন আগের? তার মেয়াদ ফুরিয়ে যায়নি তো?
গাড়ির ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ আছে কি না? বিমা, দূষণ, করের সার্টিফিকেট আছে কি না?
চারটি টায়ার, বাড়তি টায়ারের হাল কেমন? রিসোল টায়ার, জোড়াতালি দেওয়া থাকলে সেই গাড়ি না নেওয়াই ভাল।
গাড়ির দরজার ‘লক’ কাজ করে তো?
স্থায়ী নম্বরপ্লেট নেই, এমন গাড়ি ভাড়া না নেওয়াই ভাল।
কোনও সন্দেহ হলে স্থানীয় পুলিশকে জানান। ট্যুর অপারেটর সংগঠনের সহযোগিতা চান।