(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র ।
ছবি-বিতর্কে এ বার সতর্ক তৃণমূল। এ বার তৃণমূলের বিধানসভাভিত্তিক কর্মিসভা রয়েছে কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভায়। আগামী ৩১ জানুয়ারি ওই সভা হবে। বিতর্ক এড়াতে ওই সভার প্রচারে এখনও কোনও জেলা-নেতার ছবি ব্যবহার করা হয়নি। সমাজমাধ্যমে ওই কর্মিসভার প্রচারে যে পোস্টার দেওয়া হচ্ছে, সেখানে শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। ব্লক নেতৃত্ব জানিয়েছেন, কদমতলা ফুটবল খেলার মাঠে ওই কর্মিসভা হবে। তার মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেখানেও যে পোস্টার বা ফেস্টুন টাঙানো হবে, সেখানেও ওই দু'জনের ছবি থাকবে বলে দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছেন।
এর আগে নাটাবাড়ি-সহ কয়েকটি এলাকায় তৃণমূলের সভা হয়েছে। সেখানে তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ এবং সাংসদ জগদীশ চন্দ্র বর্মা বসুনিয়ার ছবি টাঙানো হয়েছিল। একটি সভায় ওই তিন জনের সঙ্গে দলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণেরও ছবি দেখা যায়। জেলার অন্য নেতাদের ছবি না রাখা নিয়ে বিতর্ক হয়। গিরীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘কর্মিসভার আয়োজন করেন স্থানীয় নেতৃত্ব। তাই এটা নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই।’’ তৃণমূলের কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি কালীশঙ্কর রায় বলেন, ‘‘আমরা ২০ হাজার সমর্থক নিয়ে কর্মিসভা করব। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি থাকবে। আমাদের এখানে কোনও বিতর্ক নেই।’’
সেই সঙ্গে, তৃণমূল নেতাদের ‘দ্বন্দ্বের’ আঁচে তেতে উঠেছে অনুগামীদের সমাজমাধ্যমের ‘দেওয়াল’! কোচবিহারে নিজেদের পছন্দের নেতাদের হয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাটন ধরেছেন অনুগামীদের অনেকে। পুরনো ভিডিয়ো, বক্তব্যকে হাতিয়ার করে হচ্ছে পোস্ট, পাল্টা-পোস্ট। যা নিয়ে দলের একাংশে চর্চা হচ্ছে। কটাক্ষের সুযোগ ছাড়ছে না বিরোধীরা। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ অবশ্য বলেন, “আমরা সবাই এক সঙ্গেই আছি। মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী হস্তক্ষেপ করলেই এ সব কিছু
বন্ধ হবে।”
দলের জেলা শীর্ষ নেতাদের ‘ঐক্যবদ্ধ-ছবি’ সামনে রেখে কোচবিহারে লোকসভা ভোটে লড়াই করে তৃণমূল। অভিযোগ, ওই সাফল্যের বছর ঘুরতে না ঘুরতে দুই শিবিরের নেতাদের কয়েক জন পরস্পরের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তোপ দেগে চলেছেন। তার রেশ পড়েছে অনুগামীদের সামাজমাধ্যমের পোস্ট, পাল্টা পোস্টে। যুযুধান শিবিরের কেউ রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, পার্থপ্রতিম রায়ের পুরনো বক্তব্যের খবরের ভিডিয়ো পোস্ট করে নিশানা করছেন। ওই প্রসঙ্গে পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সমাজমাধ্যমে কে-কী করছেন, খোঁজ রাখার সময় হয় না।” রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। কেউ আবার উদয়ন গুহ-জগদীশ বসুনিয়াকে নিশানা করে পুরনো বক্তব্যের ভিডিয়ো দিয়েছেন। উদয়নের কটাক্ষ, “এ সব করতে করতেই ওরা ক্লান্ত হয়ে যাবে।” এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া।