রান্নাঘরে: বাইরের লোকজন দেখে এপ্রন, মাস্ক পরলেন। নিজস্ব চিত্র।
হাঁড়িতে ভাত বসিয়েছেন। পাশে বসে আলু এবং ডিমের খোসা ছাড়াচ্ছিলেন দুই রাঁধুনি। হাতের গ্লাভস পেলেও সেগুলি তখনও প্যাকেটবন্দি। নতুন দেওয়া হয়েছে, মাস্ক, এপ্রন। সেগুলি পরতেও অস্বস্তি লাগছে বলে দাবি রাঁধুনিদের। জানালেন, ও সব পরে রান্না করার অভ্যাস নেই। যদি কেন্দ্রীয় দল আসে, তড়িঘড়ি পরে নেবেন। তাই হাতের কাছেই রেখেছেন। শিলিগুড়ি শহরের বাগরাকোট এলাকার জগদীশ বিদ্যাপীঠের ছবি।
জগদীশ বিদ্যাপীঠের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শুক্লা রায় ভৌমিকের বক্তব্য, ‘‘রাঁধুনিরা নিয়ম মেনে রান্না করছেন। বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের সমস্ত বিষয় নজর রাখা হচ্ছে।’’
অভিযোগ, এমন চিত্র শহর, গ্রামের অনেক স্কুলেরই। রাঁধুনিরা মানছেন, এত দিন রান্না করছেন। কখনও হাতে গ্লাভস, মুখে মাস্ক পরতে হয়নি। কিন্তু কেন্দ্রীয় দল আসার আগে, সাজ-সরঞ্জামের গুরুত্ব বেশি। তবে তাঁরা মজুরি বৃদ্ধির দাবি তুলেছেন। রান্নায় সারা দিন চলে যায়। অথচ, দিন শেষে পান মাত্র ৫০ টাকা। তার মধ্যে নতুন করে জীবাণুমুক্ত খাবার রান্নায় নানা নিয়ম পালনে অনেকের কালঘাম ছুটে যাচ্ছে বলে দাবি।
রাঁধুনিদের এই সচেতনতা বৃদ্ধিতে নজর দিতে হচ্ছে স্কুলের শিক্ষকদেরও। তাঁদের দাবি, কখনও দীর্ঘদিনের অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে রয়েছে। সেগুলি ঠিক করে আনতে বলা হচ্ছে। রান্নার দিকেও নজর রাখতে হচ্ছে। খাবার বিলির আগে, অনেক সময় চেখে দেখতেও হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকদের একাংশ। শহরের টিকিয়াপাড়ার অরবিন্দ বিদ্যামন্দিরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শম্পা সরকার বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল আসবে বলে সারাদিন মিড-ডে মিল নিয়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে। একের পরে এক জিনিস কেনার কথা বলা হচ্ছে। শিক্ষকদের সংখ্যা কম। ঠিকঠাক ক্লাস হচ্ছে না।’’ অনেক স্কুলে মিড-ডে মিল খাবারের শেড-ও নেই।
মিড-ডে মিলের তদন্তে আজ, বুধবার বাগডোগরায় নামার কথা কেন্দ্রীয় দলের। সূত্রের খবর, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহার জেলায় যাবে তারা। শিলিগুড়ি শিক্ষা-জেলার প্রকল্প অফিসার অমর বিশ্বাসের অবশ্য দাবি, ‘‘জেলার স্কুলগুলির মিড-ডে মিল পরিস্থিতি ভাল।"