Tea Production

শেষ মরসুমে উৎপাদন বাড়ল, তবু হাসি নেই চা শিল্পের মুখে

উৎপাদন বাড়লেও বাজার দর বাড়েনি। কারণ, চা শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের দাবি, চা পাতার গুণমান ভাল নয়। চায়ের মরসুম হিসাবে প্রথম এবং দ্বিতীয় ফ্লাশের পরে আসে ‘বর্ষাকালীন ফ্লাশ’।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২১
Share:

জলপাইগুড়ির এক ছোট চা বাগানে চা পাতা তোলা হচ্ছে। ছবি: সন্দীপ পাল।

উৎপাদন বাড়লেও ‘শরতের চায়ে’ স্বাদ নেই। মরসুমের শেষে হঠাৎ করে ছোট বাগানের চা পাতা উৎপাদন বেড়ে গিয়েছে। কিন্তু তাতেও যেন মুখে হাসি নেই ছোট চা চাষিদের। তাঁদের দাবি, উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু, পাতার গুণগত মান মোটেই ‘পেয়ালায়’ ঢালার মতো নয়।

Advertisement

গত মরসুমে সারা মাসই কম-বেশি চা পাতার উৎপাদন মার খেয়েছে। সার্বিক বিচারেও গত বছরের থেকে উৎপাদন পিছিয়ে। যদিও মরসুমের একেবারে শেষ মাসে, অর্থাৎ, ডিসেম্বরে উৎপাদন এক লাফে অনেকটাই বেড়েছে গত বছরের তুলনায়। যদিও এই বৃদ্ধি আটকে রয়েছে শুধু ছোট বাগানেই। বড় বা মাঝারি বাগানে উৎপাদন গত বছরের নিরিখে অনেকটাই কম। এর ব্যাখ্যা হিসাবে চা উৎপাদকদের দাবি, আবহাওয়ার যে হঠাৎ হঠাৎ পরিবর্তন হয়েছে, তার সুফল পেয়েছে ছোট চা বাগানগুলো। কারণ, বড় বাগানে ডিসেম্বরের গোড়া থেকেই গাছের মাথা ছেঁটে ফেলার কাজ হয়। ছোট বাগানে সে কাজ হয় দেরি করে, অর্থাৎ, পাতা তোলা বেশিদিন ধরে চলে। সে কারণেই বাড়তি উৎপাদনের সুফল ছোট বাগান পেয়েছে বলে দাবি।

উৎপাদন বাড়লেও বাজার দর বাড়েনি। কারণ, চা শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের দাবি, চা পাতার গুণমান ভাল নয়। চায়ের মরসুম হিসাবে প্রথম এবং দ্বিতীয় ফ্লাশের পরে আসে ‘বর্ষাকালীন ফ্লাশ’। তিন মরসুমি চা পাতা তোলার পরে, পুজোর পর থেকে যে পাতা তোলা হয় তাকে ‘শরৎকালীন ফ্লাশ’ বলা হয়। ডিসেম্বর মাসে উৎপাদনের যে পরিসংখ্যান মিলেছে তা ‘শরৎ ফ্লাশ’-এর। এই ‘ফ্লাশ’-এর চায়ে এ বছর তেমন স্বাদ নেই বলে দামও মেলেনি, দাবি চা শিল্পের। চা পর্ষদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে রাজ্যের বড় বাগানের চা পাতা উৎপাদন প্রায় ৬০ লক্ষ কেজি, যেখানে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে উৎপাদন ছিল প্রায় আশি লক্ষ কেজি। ছোট বাগানে গত ডিসেম্বরে উৎপাদন হয়েছে তিন কোটি কেজি, যেখানে ২০২২ সালে উৎপাদন ছিল দু’কোটি কেজি। অর্থাৎ, ছোট বাগানে চা উৎপাদন বেড়েছে। সার্বিক ভাবে ডিসেম্বরে রাজ্যে প্রায় চার কোটি কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়েছে, গত বছর ছিল যা পৌনে তিন কোটি কেজি। এই বৃদ্ধির পুরোটাই ছোট চা চা বাগান থেকে এসেছে। ছোট চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “উৎপাদন ভাল হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পাতা ভাল নয়। চা ভাল হয়নি। তাই বাজারও ভাল হয়নি।”

Advertisement

মরসুম শেষে উৎপাদন বৃদ্ধিও তাই হাসি ফোটাতে পারেনি রাজ্যের চা মহল্লায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement