ফাইল চিত্র
আনাজের দোকান ঘিরে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়ছে। ক্রেতা-বিক্রেতার বেশির ভাগের মাস্ক ঝুলে নাকের নীচে। এমনই পরিস্থিতি দেখা গেল রবিবার সকালে রায়গঞ্জ শহরের মোহনবাটী বাজারে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয় নেই? এই প্রশ্ন শুনে আনাজ ব্যবসায়ী কমলেশ সাহার পাল্টা প্রশ্ন, “বাড়িতে বসে থাকলে সংসার চলবে কী ভাবে?” কমলেশের দোকানে ক্রেতাদের ভিড়ের মাঝেই বাঁ হাত দিয়ে শাড়ির আঁচল দিয়ে মুখ ও নাক ঢেকে আলু বেছে ঝুড়িতে তুলছিলেন শহরের মিলনপাড়া এলাকার বাসিন্দা গৃহবধূ মনশ্রী মোদক। একই প্রশ্ন শুনে তাঁরও পাল্টা প্রশ্ন, “বাজার না করলে বাড়িতে রান্না হবে কী করে?” তিনি বলেন, “লকডাউনের শুরুতে কিছু লোক পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে আনাজ বিক্রি করতেন। এখন তাঁদের আর দেখা যাচ্ছে না। তাই আনাজ কিনতে বাজারে এসেছি। তাড়াহুড়োয় মাস্ক পরতে ভুলে গিয়েছি।”
করোনা সংক্রমণ ছড়ানো রুখতে ১৫ জুলাই থেকে রায়গঞ্জ শহরে শহরভিত্তিক পূর্ণ লকডাউন বিধি জারি হয়। এ দিন দ্বিতীয় দফার সেই লকডাউনের শেষ দিন ছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত শহরে পূর্ণ লকডাউনের দৃশ্য চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ। অভিযোগ, দিনভর শহরের সুদর্শনপুর থেকে কসবা ও জেলখানা মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুধারের বেশিরভাগ দোকান খোলা ছিল। দিনভর যানবাহনও চলেছে। এফসিআই, গোশালা, দেবীনগর, সুপারমার্কেট, বন্দর ও বিধাননগর বাজারে ভিড় উপচে পড়েছিল। বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশের একটানা নজরদারি ও অভিযান না থাকায় গোড়া থেকেই শহরে স্থানীয় স্তরের লকডাউন কার্যকরী হচ্ছে না।
রায়গঞ্জের ডিএসপি প্রসাদ প্রধানের দাবি, বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের একাংশ সচেতন না হওয়ায় পুলিশ অভিযান চালিয়েও শহরে একটানা লকডাউন কার্যকরী করতে পারছে না।
পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, “গত আটদিনে করোনা আক্রান্ত শহরের বিভিন্ন এলাকার চার জন বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত শহরে ১২৩ জন বাসিন্দা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরেও বাসিন্দারা সচেতন না হলে সংক্রমণ রোখা সম্ভব হবে না।”