উড়ান: এত দিন ধরে বিমানটি ছিল কোচবিহার বিমানবন্দরে। সোমবারে সেটি উড়ে গেল। —নিজস্ব চিত্র
অবশেষে প্রায় দেড় মাসের মাথায় কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে উড়ল সেশনা। সোমবার বিকেল সওয়া ৫টা নাগাদ কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে বিমানটি বাগডোগরার দিকে রওনা হয়। বিজেপির সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ২৭ জুলাই ওই সেশনা বিমানটিতে চেপে হঠাৎই হাজির হয়েছিলেন কোচবিহার বিমানবন্দরে। তার পরে আর ফিরে যাওয়া হয়নি বিমানটি। এ দিন নিশীথ অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্যই কোচবিহার থেকে বিমান চলাচল শুরু হল না। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার চায় না কোচবিহার থেকে বিমান চলাচল করুক। সে জন্যেই বিমানবন্দর থেকে নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয়। বিমান সংস্থাকে ফিরে যেতে বাধ্য করা হল। মানুষই এর জবাব দেবে।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বিমান মন্ত্রক ওই বিষয়ে কিছুই জানায়নি। তাই অসহযোগিতার কথার কোনও প্রশ্নই নেই। কেউ একজন হঠাৎ করে বিমান নিয়ে এলেই চলাচল শুরু হয়ে যায় না। তার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। তা মেনেই চলতে হবে।”
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, হায়দরাবাদের কাছে ওই ৯ আসনের বিমান ভাড়া নিয়েছিল কলকাতার একটি সংস্থা। অ-নথিভুক্ত হিসেবে ওই বিমান কোচবিহার থেকে চালানোর কথা ছিল তাদের। সেই হিসেবেই ২৭ জুলাই বিমানটি কোচবিহার বিমানবন্দরে আনা হয়। ওই বিমান থেকে নেমে সাংসদ নিশীথ ঘোষণা করেন, ১ অগস্ট থেকে কোচবহার-বাগডোগরা এবং কোচবিহার–গুয়াহাটির মধ্যে নিয়মিত চলবে বিমানটি। তাদের কেন সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে অ-নথিভুক্ত একটি বিমানকে নথিভুক্ত হিসেবে চালানো হচ্ছে, এই প্রশ্ন তুলে আপত্তি জানায় রাজ্য। সে দিনই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দর থেকে নিরাপত্তা ও দমকল পরিষেবা তুলে নেয় তারা। বাধ্য হয়ে কোচবিহার থেকে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয় এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া। তার পর থেকেই পার্কিং বে-তে ৯ আসনের ওই ওই সেশনা দাঁড়িয়ে ছিল।
বিমানের সুরক্ষা ঠিক রাখতে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হয় বিমানবন্দরে। ১৫ অগস্টের আগে অবশ্য বিমানবন্দরে ফের রক্ষী মোতায়েন করে রাজ্য সরকার। দিন কয়েক আগে অ্যান্টি হাইজ্যাকিং টিমও দিয়ে দেওয়া হয়। কোচবিহার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সংস্থাটিকে বিমান ওড়ানোর জন্য অনুমতিও দিয়ে দেন। অবশেষে এ দিন বিমানটি নিয়ে যাওয়া হয়।
কোচবিহার বিমানবন্দরের ডিরেক্টর বিপ্লব মণ্ডল বলেন, “বিমানটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে।” বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ওই বিমানের জন্য রোজ ৭০ হাজার টাকা করে ভাড়া গুণতে হয়েছে। বিমানচালক, কর্মীদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকেও ভাড়া দিতে হয়েছে তাদের। তাই নতুন করে ওই সংস্থা আর কোচবিহার থেকে বিমান চলাচলে আগ্রহী নয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের কেউ কেউ বলেন, “বিমানবন্দর নিয়ে শুধু রাজনীতি হচ্ছে। আর কিছু হচ্ছে না।”