নজরদারি: মাদ্রাসা পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীরা। করণদিঘিতে। নিজস্ব চিত্র
মাদ্রাসায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যার নিরিখে এগিয়ে মেয়েরা। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, উত্তর দিনাজপুর জেলার ২১টি মাদ্রাসা থেকে ৫০০২ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তাদের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যা ৩ হাজার ২৬৫।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, শিক্ষাশ্রী ও সবুজসাথী প্রকল্পের সাফ্যল্যেই জেলায় মাদ্রাসা বোর্ডের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা বেশি।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, মেয়েদের শিক্ষার জন্য সরকার একাধিক প্রকল্প চালু করেছে। প্রকল্পগুলির সুবিধা পেয়ে আরও বেশি সংখ্যক মেয়েরা স্কুলমুখী হচ্ছে।
করণদিঘির রহটপুর হাইমাদ্রসা থেকে এ বার ১০৪ ছাত্র এবং ২৬৪ জন ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রধান শিক্ষক সাহিদুর রহমান অবশ্য বলেন, ‘‘এই জেলায় মেয়েরা পড়াশোনায় পিছিয়ে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু মেয়েরা। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে স্কুল-মাদ্রাসায় মেয়েদের ঝোঁক বাড়লেও, ছেলেদের ভিন্ রাজ্যে কাজে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। তাই ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা বেশি।’’
পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা মাদ্রাসা বোর্ড সদস্য আব্দুস শাকির বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় স্কুলের পাশাপাশি মাদ্রসার উন্নয়নে নজর দিয়েছেন। পড়ুয়াদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করায় ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও স্কুল ও মাদ্রাসামুখী হচ্ছে।’’
গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলেন, ‘‘দারিদ্র্য, বাল্যবিবাহ, পাচারের মতো ঘটনায় এ জেলায় মেয়েরা ক্রমশ পিছিয়ে যাচ্ছিল। অনেকে মাঝপথে পড়া ছেড়ে দিতেও বাধ্য হত। এ সবের বিরুদ্ধে লড়াই করে মেয়েদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। সে জন্যেই মেয়েদের স্কুলে আসার আগ্রহ বেড়েছে।’’ প্রশাসনিক সূত্রে খবর, রায়গঞ্জের বিন্দোল হাইমাদ্রাসা থেকে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েদের সংখ্যা ৪৬৭। ছেলেদের সংখ্যা ১৭৪। দোধিকোটবাড়ি আসরাফিয়া হাই মাদ্রাসায় মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬৯ জন। চাকুলিয়ার শিরশি সিনিয়র হাই মাদ্রসা মেয়েদের পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৩৫৩। ছেলেদের সংখ্যা ১৮৭ জন।
আশারুবস্তি হাই মাদ্রাসার শিক্ষক ওসমান গনি বলেন, ‘‘মেয়েদের শিক্ষিত করার বিষয়ে কয়েক বছর আগে থেকে অভিভাবকেরাই সচেতন হয়েছেন। তারই সুফল এ ভাবে মিলছে।’’