প্রতীকী ছবি
করোনা আবহে চরম রক্ত সঙ্কট চলছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে। গত কয়েকদিন ধরেই ব্লাডব্যাঙ্কের ভাঁড়ার শূন্য। লকডাউনে রক্তদান শিবির এক রকম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় রোগীরা, অসুবিধায় পড়েছেন প্রায় ৭০০ জন থ্যালাসেমিয়া রোগী। দু’সপ্তাহ বা এক মাস পর পর তাঁদের রক্ত দিতে হয়। একেই শিবির হচ্ছে না, তার উপর পরিস্থিতি কবে ঠিক হবে, তারও কোনও নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থায় কী করা যায় তা নিয়েই চিন্তায় প্রত্যেকেই।
পরিসংখ্যান বলছে, গত বছর জুলাইতে জেলায় শিবির হয়েছিল ৩১টি, এ বছর সেই সংখ্যাটা মাত্র চার। তাও আবার শিবিরে রক্তদাতার সংখ্যাও ছিল আগের চেয়ে অনেক কম। অথচ প্রতিদিন জেলার মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং নার্সিংহোম মিলিয়ে গড়ে অন্তত ৮০ ইউনিট রক্ত দরকার হয়। আর হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ক’দিন ধরে ব্লাডব্যাঙ্কে এক ইউনিট রক্তও নেই। রোগীর পরিবার রক্তদাতা জোগাড় করে আনলে তবেই রোগী রক্ত পাচ্ছেন। কিন্তু প্রশাসন বা ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি কেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে না, তা নিয়েই সরব হয়েছেন একাংশ বাসিন্দা। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা বিভিন্ন স্তরে আবেদন করেছেন।
ব্লাডব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি বছর মে ও জুন মাসে গরমের কারণে রক্তদান শিবির কম হওয়ায় ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত সঙ্কট দেখা যায়। কিন্তু এ বার, করোনা আবহে লকডাউন শুরুর পর থেকেই সমস্যা শুরু হয়েছে। সূত্রের মতে, লকডাউন শুরুর পর মার্চের শেষ সপ্তাহে মাত্র দু’টি রক্তদান শিবিরে ২১ জন রক্ত দেন। এপ্রিলে আয়োজিত ১৫টি শিবিরে রক্তদাতা ছিলেন ৪৪৭ জন, মে মাসে ১৬টি শিবিরে ৪২৩ জন, জুনে ১৭টি শিবিরে ৪৩৪ জন এবং জুলাই মাসে মাত্র চারটি শিবিরে রক্ত দিয়েছেন ১০১ জন। আর এ বছরের শুরু থেকে লকডাউনের আগে পর্যন্ত ৬২টি শিবিরে ২১০৬ ইউনিট রক্ত মিলেছিল, লকডাউনের পরে এ দিন পর্যন্ত ৫৪টি শিবিরে ১৪২৬ ইউনিট রক্ত পাওয়া গিয়েছে।
ভারত স্কাউটস অ্যান্ড গাইডসের মালদহ জেলা রক্তদান শিবিরের আহ্বায়ক অনিলকুমার সাহা বলেন, ‘‘২০ বছরে এই প্রথম বছরের এই সময়ে জেলায় এ রকম সমস্যা হল। আমরা শিবির আয়োজনের চেষ্টা করছি।’’
মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘ক্লাবগুলিকে ছোট ছোট রক্তদান শিবির আয়োজনের জন্য অনুরোধ করছি। প্রশাসনিক ভাবে আমরাও চেষ্টা করছি।’’