ড্রোন উড়িয়ে চলছে পুলিশের নজরদারি। — নিজস্ব চিত্র।
এখনও থমথমে মালদহের চাঁচলের কলিগ্রাম প্রাণসাগর এলাকা। মহালয়া থেকে যে গোলমালের শুরু তাতে এখনও পর্যন্ত দু’পক্ষের সাত জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বৃহস্পতিবারই আদালতে তোলে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। স্থানীয়রা অবশ্য এ বার গোলমালের ইতি চাইছেন। শান্তি ফেরাতে পুলিশের তৎপরতাও চোখে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। ড্রোন উড়িয়ে চলছে আকাশপথে নজরদারি। মাটিতে চলছে পুলিশের রুটমার্চ।
ফুটবল মাঠের সামান্য গোলমালকে ক্রমশ রাজনীতির মুখরোচক বিষয় হয়ে উঠতে দেখেছেন চাঁচলবাসী। স্থানীয় সূত্রে খবর, মহালয়ার দিন দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। দুই পক্ষের মধ্যে আবার আড়াআড়ি রাজনৈতিক বিভাজন। এক পক্ষ তৃণমূলের সমর্থক, বিবাদমান অপর পক্ষ কংগ্রেস এবং সিপিএমের সমর্থকে ভরা। তখনকার মতো গোলমাল ধামাচাপা পড়লেও অভিযোগ, সে দিনই বাইকে বাড়ি ফেরার সময় স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত প্রধান রেজাইল খানের ভাই ইমরানের উপর বাঁশ, লাঠি নিয়ে হামলা চালায় কংগ্রেসের লোকজন। তার পর সপ্তমীতে ফের উত্তপ্ত হয় এলাকা। সে দিন এক কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তার পর বুধবার ভোরে রেজাউলের পুরনো বাড়িতে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। দু’পক্ষে দফায় দফায় মারামারি হয়। আহত হন অন্তত ১৫ জন। এ ভাবেই এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলতে থাকে। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয় শাসকদল তৃণমূল। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। বুধবার রাতে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মোট সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। যাঁর মধ্যে দু’জন তৃণমূলের, কংগ্রেসের রয়েছেন পাঁচ জন। এ ছাড়াও নতুন করে যাতে আর অশান্তি না ছড়ায় সে জন্য বিশাল পুলিশবাহিনী দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। রুট মার্চ করছেন জওয়ানরা। ড্রোন দিয়ে আকাশপথে চলছে কড়া নজরদারি।
এই পরিস্থিতিতে শান্তির আবেদন জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। যে ভাবে খেলার মাঠের গোলমাল বাড়ি ভাঙচুর এবং আগুন লাগানোয় পর্যবসিত হল, তা দেখে আতঙ্কিত তাঁরা। এলাকাবাসীর একটাই আবেদন, যে কোনও মূল্যে শান্তি ফিরুক এলাকায়।