আদিবাসী গ্রামে চিন্তা নথি নিয়ে

সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, অসমের নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়া ১৯ লক্ষ মানুষের মধ্যে আদিবাসীর সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। আর তার জেরেই পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসীদের মধ্যে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সচেতনতা প্রচারে নেমেছে ওই সংগঠন।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

করণদিঘি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৪৩
Share:

ফাইল চিত্র

এনআরসি নিয়ে আশঙ্কার জেরে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির আলতাপুরের আদিবাসীপাড়ায় সচেতনতা শিবির করছে আদিবাসী ছাত্র যুব সংগঠন। নাগরিকপঞ্জির কাজে প্রয়োজনীয় নথিপত্র ঠিক করতেও এলাকাবাসীকে সাহায্য করছেন ওই সংগঠনের সদস্যেরা।

Advertisement

সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, অসমের নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়া ১৯ লক্ষ মানুষের মধ্যে আদিবাসীর সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। আর তার জেরেই পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসীদের মধ্যে আশঙ্কা ছড়িয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সচেতনতা প্রচারে নেমেছে ওই সংগঠন।

সোমবার আলতাপুরে ওই সংগঠনের সদস্যরা আদিবাসীপাড়ার বাড়ি বাড়ি ঘোরেন। তাঁরা জানান, এলাকার কোনও কোনও বাসিন্দা এনআরসি আদতে কী, তা-ই জানেন না। অনেকের জমির নথি, ভোটার পরিচয়পত্রে ভুল রয়েছে। সে সব নথি কী ভাবে ঠিক করা যাবে, তা-ও সকলকে জানানো হয়।

Advertisement

সংগঠনের সদস্য রমেন মার্ডি বলেন, ‘‘বিজেপি আশ্বাস দিয়েছিল আদিবাসীদের কোনও ভয় নেই। তা হলে অসমে কেন আদিবাসীরা তালিকা থেকে বাদ পড়লেন? এ রাজ্যেও যদি এনআরসির আওতায় আদিবাসীরা পড়েন, সে কথা ভেবে আগে থেকে নথি ঠিক করে রাখার কাজ চলছে।’’ তিনি জানান, গ্রামের অনেকের নথিতে দেখা গিয়েছে, কেউ কেউ অনলাইনে ভোটার পরিচয়পত্র ‘আপডেট’ করেননি। রয়েছে নাম বিভ্রাটও।

ওই সংগঠন গড়তে উদ্যোগী হয়েছিলেন করণদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি স্যামুয়েল মার্ডিও। তিনি বলেন, ‘‘অন্যদের এনআরসি সম্পর্কে জানার যে সুযোগ রয়েছে, আদিবাসীদের তা নেই। এ রাজ্যে এনআরসি চালু হলে আদিবাসীরা বিপাকে পড়তে পারেন।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘আদিবাসীরা অনুপ্রবেশকারী নন, তা হলে অসমে এত সংখ্যক আদিবাসী নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ পড়লেন কেন? আমরা এই নিয়ে চিন্তিত। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের আশ্বাসের সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।’’

তিনি জানান, এমন পরিস্থিতিতে এ রাজ্যে এনআরসি লাগু হলে আদিবাসী মানুষেরা যাতে নথি নিয়ে বিপাকে না পড়েন, সে কারণে সংগঠনের সদস্যরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে নথি ঠিক করার কাজ করছেন।

করণদিঘির রসাখোয়া আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দা মাটরু সরেন বলেন, ‘‘আমার তো জমি নেই। তা বলে কি তাড়িয়ে দেবে? আমরা এখানকার বাসিন্দা। আমাদের যাঁরা তাড়াতে আসবেন তাঁদেরই তাড়িয়ে দেব।’’

সংগঠনের সদস্যরা জানান, জমির দলিল, জন্ম শংসাপত্র, ভোটার তালিকা, শরণার্থী শংসাপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরের আকাউন্ট-সহ ১৪টি নথি নাগরিত্বের প্রমাণ বলে ধরা হচ্ছে। কিন্ত অনেক আদিবাসী মানুষের কাছে সে সব নথি দাখিল করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেওয়া সমস্যার।

এ নিয়ে জেলা বিজেপির সম্পাদক বিশ্বনাথ মৃধা বলেন, ‘‘বিরোধীরা এনআরসি-র নামে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement