—ফাইল চিত্র।
বিধানসভার উপনির্বাচন ও পুর-নির্বাচনে জোটের আগেই আলিপুরদুয়ারে কংগ্রেস ও বাম নেতাদের মধ্যে কার্যত সংঘাত শুরু হয়ে গেল।
আগামী বুধবার আলিপুরদুয়ার পুরসভার আসন সমঝোতা নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন দুই শিবিরের নেতারা। রবিবার সংবাদ মাধ্যমের সামনে সিপিএমের জেলা সম্পাদকের এই ঘোষণা করায় বেজায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতারা। সেইসঙ্গে ফালাকাটা উপনির্বাচনে এখনও নিজেদের দলের প্রার্থীকে দাঁড় করাতে মরিয়া তাঁরা। যদিও ফালাকাটা উপনির্বাচন নিয়ে কংগ্রেসের এই দাবির পিছনে কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএম।
রাজ্যে সম্প্রতি হয়ে যাওয়া তিনটি উপনির্বাচনেই আসন সমঝোতা করে লড়াই করেছে কংগ্রেস ও বামেরা। একই পদ্ধতিতে ফালাকাটা উপনির্বাচন নিয়েও লড়াই করতে চায় দুই শিবির। কিন্তু জোট বা আসন সমঝোতা হলে ফালাকাটায় কে প্রার্থী দেবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দুই শিবিরের মধ্যে দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছে। আর এবার আসন সমঝোতা নিয়ে দুই শিবিরের বৈঠকের দিনক্ষণ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণালকান্তি রায় প্রকাশ্যেই ঘোষণা করে দেওয়ার জেরে আলিপুরদুয়ার পুরসভার নির্বাচন নিয়েও দুই শিবিরের মধ্যে কোন্দল শুরু হয়ে গেল।
রবিবার আলিপুরদুয়ার শহর ও ফালাকাটায় দু’টি কর্মিসভা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তার আগে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ফালাকাটায় কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেই উপনির্বাচনে লড়বে দল। আর আলিপুরদুয়ার পুরসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের কৌশল জেলার বাম নেতারা ঠিক করবেন। সূর্যকান্তের ওই ঘোষণার কিছুক্ষণ পরই দলের জেলা সম্পাদক মৃণালকান্তি রায় বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ার পুরসভাতেও কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে লড়াই হবে বলে আমাদের আশা। সেই আসন সমঝোতা ঠিক করতে আগামী বুধবার দুই শিবিরের নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসবেন।’’
তাঁর এই ঘোষণার পরই নিজের ক্ষোভ উগরে দেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গজেন বর্মণ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ওইদিন বামেদের সঙ্গে আমাদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক হওয়ার কথা। ওই বৈঠকের কথা আগাম প্রকাশ করা হবে না বলে দুই পক্ষের মধ্যেই আলোচনা করে ঠিক হয়েছিল। তারপরও সিপিএমের তরফে ওই বৈঠকের দিনক্ষণ সংবাদমাধ্যমে বলে দেওয়াটা ঠিক হয়নি। বৈঠকের দিন সিপিএম নেতাদের কাছে এই বিষয়টি আমরা জানতে চাইব।’’
ফালাকাটা উপনির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট হলেও তাঁরা যাতে প্রার্থী দিতে পারেন, সে ব্যাপারে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে আর্জি জানানো হবে বলে শনিবারই জানিয়েছিলেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি। যার প্রেক্ষিতে এ দিন মৃণাল বলেন, ‘‘কংগ্রেসের এই দাবির পিছনে একটা যুক্তি থাকা প্রয়োজন। যেটা ওঁদের কাছে নেই।’’ এর উত্তরে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গজেন পাল্টা বলেন, ‘‘ফালাকাটায় আমরা যে প্রার্থী দিতে চাই, সে বিষয়ে প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে আর্জি জানাতে কোনও যুক্তির প্রয়োজন পড়ে না। তাই আমরা এই আর্জি জানাব। তবে হ্যাঁ, প্রদেশ নেতৃত্বই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’