ছবি: সংগৃহীত
সার্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবন তৈরিতে ফের ধাক্কা খেল পূর্ত দফতর। গত ৩১ মে জলপাইগুড়িতে স্থায়ী ভবন তৈরির জন্য আগ্রহী সংস্থাগুলির থেকে দরপত্র চাওয়া হয়েছিল। তাতে মাত্র দু’টি সংস্থা আগ্রহ দেখায়। দু’টি সংস্থার মধ্যেই যোগ্য কাউকে বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল পূর্ত দফতর। নিয়ম অনুযায়ী ন্যূনতম তিনটি সংস্থা হলে তবেই বাছাই করা যায়। সার্কিট বেঞ্চের বিষয়টিকে ‘বিশেষ কেস’ বিবেচনা করে অর্থ দফতর থেকে ছাড় চেয়েছিল পূর্ত দফতর। সূত্রের খবর, অর্থ দফতর সেই আর্জি নাকচ করে দিয়েছে। ফলে এখন সার্কিট বেঞ্চ ভবন তৈরির জন্য ফের দরপত্র চাইতে হবে। এ দিকে হাইকোর্ট প্রশাসন চাইছে স্থায়ী ভবন তৈরির কাজ দ্রুত শুরু হোক। কাজ জলদি শেষ করা হবে জানিয়ে পূর্ত দফতরকে হলফনামাও দিতে হয়েছে হাইকোর্টে। পুজোর আগেই কাজ শুরু হবে বলে পূর্ত দফতর জানিয়েও ছিল। কিন্তু এখন প্রক্রিয়াটি পিছিয়ে গেল।
পূর্ত দফতরের এক অধীক্ষক বাস্তুকারের মন্তব্য, “কাজ শুরু করতে কিছুটা দেরি হল ঠিকই। কোনও কাজে দ্বিতীয়বার টেন্ডার ডাকা হলে তিনটি সংস্থাকে অংশ নিতেই হবে, এমন নিয়ম নেই। একটি সংস্থা রাজি হলেও কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া যায়।’’
স্থায়ী ভবন তৈরি নিয়ে বারবার ধাক্কা খেতে হয়েছে রাজ্যকে। একবার কাজ শুরু করেও বন্ধ হয়ে যায়। ২০১২ সালে স্থায়ী ভবনের শিলান্যাস করে রাজ্য। কাজ শুরুর দ্বিতীয় দিনেই হাইকোর্টের তৎকালীন প্রশাসনের আপত্তিতে তা আটকে যায় বলে খবর। ভবনের নকশা নিয়ে আপত্তি ছিল হাইকোর্ট প্রশাসনের। নতুন নকশা তৈরি করে হাইকোর্টের অনুমোদন নিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে টেন্ডার ডাকে পূর্ত দফতর। প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকার টেন্ডার হয়। কয়েক মাস বাদে পূর্ত দফতর নিজেই সেই টেন্ডার বাতিল করে দেয়। দফতরের যুক্তি, ভবন নির্মাণে যে খরচ ধরা হয়েছে, সময়ের সঙ্গে তা অনেকটা বেড়ে গিয়ে থাকতে পারে। নতুন নিয়মে আগ্রহী সংস্থাগুলির কাছেই ভবনের দর কত হবে জানতে চেয়ে দরপত্র চায় পূর্ত দফতর। ৩১ মে সেই দরপত্র চাওয়া হয়। ৯ জুলাই দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে দেখা যায়, মাত্র দু’টি সংস্থা তা জমা দিয়েছে। তার পরেও প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে থাকে পূর্ত দফতর।
দফতরের আশা ছিল, সার্কিট বেঞ্চের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় মিলতে পারে। মার্চ মাস থেকে অস্থায়ী ভবনে সার্কিট বেঞ্চের কাজ চলছে। নিয়মিত বেঞ্চ বসছে জলপাইগুড়িতে। মামলার সংখ্যাও বাড়ছে। অস্থায়ী ভবনে ঘরের সংখ্যা কম। রেকর্ড রুমেও জায়গা কুলোচ্ছে না বলে খবর। এই পরিস্থিতিতে হাইকোর্ট প্রশাসন চাইছে দ্রুত স্থায়ী ভবন তৈরি হোক। হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিজিৎ সরকার বলেন, “বিচারপতিরা বারবার স্থায়ী ভবনের কাজ দ্রুত শেষ করায় জোর দিচ্ছেন। আমরা পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা বলব।”