একটা নিরীহ মিস্ড কল দিয়ে শুরু! শেষ যৌনপল্লিতে। তার পরেও একটা শুরু ছিল। পরিবারে ফিরে আসার রুপোলি রেখা ছিল। কিন্তু, বাবার মৃতদেহের সামনে কিশোরীর ঝাপসা চোখে এখন সব কিছুই ধূসর!
মেয়েটির বয়স মেরেকেটে ১৬ হবে! বাড়ি শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে, আমবাড়িতে। চেহারায় গ্রামীণ হলেও আমবাড়ি থানা শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের আওতাতেই পড়ে। এক রাতে হঠাত্ই মেয়েটার মোবাইলে একটি মিস্ড কল আসে। নম্বর অচেনা। তাই ঘুরিয়ে সেই নম্বরে পাল্টা ফোন করে মেয়েটি। ও পাশে পুরুষ কণ্ঠ। পরিচয় হয় ছেলেটির সঙ্গে। নাম পিন্টু বর্মণ। এ ভাবেই বেশ ক’দিন কথাবার্তা চলতে থাকে।
এর পর এক দিন সকালে আমবাড়ি থেকে বাসে চেপে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দেয় কিশোরী। সেখানে পিন্টুর সঙ্গে দেখা হয়। ওই যুবক তার সঙ্গে ভিকি এবং তপন নামে অন্য দুই যুবকের পরিচয় করিয়ে দেয়। ওই দুই যুবক এর পর তাকে নিয়ে সোজা শিলিগুড়ি চলে আসে। ভয় দেখিয়ে তার উপর যৌন নির্যাতনও চালায়। এর পর কোচবিহারের যৌনপল্লির এক দালালের কাছে চড়া ‘দামে’ বিক্রি করে দেওয়া হয় ওই কিশোরীকে।
গত ১৪ জুলাই আমবাড়ি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে ওই কিশোরীর পরিবার। পুলিশ তদন্তে নামে। তবে, শেষ পর্যন্ত মেয়েটিকে পায়নি তারা। সোমবার সন্ধ্যায় হঠাত্ই আমবাড়ি থানায় এসে হাজির হয় ওই কিশোরী। ওই যৌনপল্লি থেকে কোনও ভাবে পালিয়ে এসে পুলিশকে সব কথা বলে সে। প্রকাশ্যে আসে পিন্টু, ভিকি, তপনের কীর্তি। তার অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শেষ দু’জনকে গ্রেফতার করে।
ট্রমা কাটিয়ে সবে যখন আবার মূলস্রোতে ফেরার চেষ্টা করছে ওই কিশোরী, তখনই নেমে আসে চরম আঘাত। মেয়ে ফিরে আসার ঘটনা জানতে পেরে পর দিন সকালে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তার বাবা। যৌনপল্লিতে মেয়ের বিক্রি হয়ে যাওয়ার ঘটনা মেনে নিতে পারেননি দরিদ্র ওই কৃষক। ১৬ বছরের কিশোরীর সামনে ভবিষ্যত্টাই এখন ঝাপসা ঠেকছে!