প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র
বেশকিছু দিন ধরে শিলিগুড়ি পুরসভার ওয়ার্ডগুলি নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছে পিকে’র টিম। শহরের নেতানেত্রীদের একাংশের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। কথা বলেছেন শহরের একাধিক বাসিন্দার সঙ্গেও। সেসবের উপর ভিত্তি করেই একটি ‘স্পেশ্যাল রিপোর্ট’ তৈরি করেছে পিকে’র টিম। সূত্রের খবর, সেই রিপোর্টের সঙ্গে থাকছে আসন্ন পুরভোটে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকাও। দল সূত্রের খবর, ১ মার্চ কলকাতায় প্রশান্ত কিশোর এবং পরে তৃণমূল নেত্রীর কাছে তা জমা পড়ার কথা।
ওই সমীক্ষা এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামের তালিকা দেখার পরে জেলার নেতাদের তৈরি আলাদা তালিকা নিয়ে বসবেন তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব। কয়েক দফায় আলোচনার পরেই চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঠিক হবে। শিলিগুড়ি শহর নিয়ে পিকের টিম কী বক্তব্য রাখছে তা দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার পথে হাঁটবেন তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, দলের কোন্দল রোখা, বিতর্কিত নেতাদের প্রচারে না রাখার বিযয়টি ভাবা হচ্ছে। এছাড়া মেয়র হিসেবে কোনও মুখ সামনে রেখে লড়াই, আদি তৃণমূলীদের গুরুত্ব বাড়ানোর মতো বিষয়গুলি ওই রিপোর্টে থাকার কথা।
আপাতত রাজ্য এবং জেলাস্তরের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন পিকের টিমের প্রতিনিধিরা। তা থেকে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে শিলিগুড়িতে এ বার বেশিরভাগ ওয়ার্ডেই ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে। তৃণমূলের সঙ্গে বাম-কংগ্রেস জোট এবং বিজেপির লড়াই হবে। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রতিটি ওয়ার্ডে বিজেপির শক্তিশালী সংগঠন না থাকলেও তাদের সমর্থনে একটি হাওয়া কমবেশি রয়েছে। এ বার বাম ও কংগ্রেসের একসঙ্গে লড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তারাও সমর্থন পাবে বলে মনে করছে জেলা নেতৃত্ব। যোগ্য প্রার্থী দিতে না পারলে পুরবোর্ড দখল অনেক দূরে থেকে যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। ত্রিমুখী লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে সঠিক ভাবমূর্তির প্রার্থী উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
দলীয় সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে শহরের একাধিক ওয়ার্ডে প্রার্থী ঠিক করা নিয়ে কোন্দল শুরু হয়েছে। জেলা সভাপতি ও বর্তমান কাউন্সিলর রঞ্জন সরকারের ওয়ার্ড এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পুরনো নেতানেত্রীদের অনেকেই এ বার ভোটে লড়তে চান। সেক্ষেত্রে তাঁদের গ্রহণযোগ্যতাও বিচার করা হচ্ছে। আবার নতুন কেউ তৃণমূলে যোগ দিয়ে টিকিট পেয়ে গেলে পাড়ায় পাড়ায় পুরনো কর্মীদের ময়দানে নামানো নিয়েও সংশয় রয়েছে বলে নেতৃত্বের একাংশ জানাচ্ছেন।
শিলিগুড়িতে গত কয়েক বছর ধরে কোনও নির্বাচনে তৃণমূল জয় পায়নি। একবার বিধানসভা ভোটে হারের পরে তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়া অভিযোগ করেছিলেন, নেতাদের একাংশ ভোটে সঠিকভাবে কাজ করেন না। এ বার পিকের টিমের কাছেও একজোট হয়ে লড়াই হয় না বলে অভিযোগ জমা পড়েছে। সেসব কলকাতায় লিপিবদ্ধ করে জানানোর প্রস্তুতি চলছে।