কলকাতায় শিক্ষকরা

নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে এসেও কেউ কাজে যোগ দিয়েছেন পদ কনভার্সন বা রূপান্তরের পর। কারও কনভার্সন না-হওয়ায় এখনও যোগ দিতে পারেননি। অথচ ১৩ সেপ্টেম্বর নিয়োগপত্র পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:৪৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

নিয়োগপত্র হাতে নিয়ে এসেও কেউ কাজে যোগ দিয়েছেন পদ কনভার্সন বা রূপান্তরের পর। কারও কনভার্সন না-হওয়ায় এখনও যোগ দিতে পারেননি। অথচ ১৩ সেপ্টেম্বর নিয়োগপত্র পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে যোগ দিতে বলা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী পদ রূপান্তর অবৈধ জানানোর পর কনভার্সন করিয়ে যোগ দেওয়া শিক্ষকদেরও মঙ্গলবার থেকে অনেককে স্কুল করতে দেওয়া হচ্ছে না। মঙ্গলবার তাঁদের অনেকেই স্কুল পরিদর্শকের দফতরের দ্বারস্থ হয়েছেন। পরিস্থিতি জানিয়ে স্কুল পরিদর্শকের দফতরে চিঠি দিয়ে কেউ বিকাশ ভবনে এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের দফতরে জানাতে এ দিনই কলকাতায় রওনা হয়েছেন। কেন না, ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তাঁদের বিষয়টি জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

Advertisement

উত্তর দিনাজপুর জেলায় শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে সমস্যার এখানেই শেষ নয়। কনভার্সন করে কাজে যোগ দেওয়ালেও তাদের বেতনের নথি পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ। কেন না ২০১২ সাল থেকে কনভার্সন অবৈধ হওয়ার ফলে এখন আর ওই পদ্ধতি মেনে কোনও শিক্ষককেই যোগদান করানো সম্ভব নয়। তাই স্কুল পরিদর্শকের দফতরের আধিকারিকদের ডেকে নথি পরীক্ষা শুরু করেছেন তিনি। দাড়িভিট কাণ্ডে স্কুল পরিদর্শক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল সাসপেন্ড হওয়ার পরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্কুল পরিদর্শক সুজিত মাইতিকে। তিনি পরিস্থিতি নিয়ে কিছু বলতে চাননি।

শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুর জেলায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বাস্তবে শূন্য পদ রয়েছে ১৫১টি। নিয়োগের জন্য এসএসসি থেকে ‘রেকমেন্ড’ করা হচ্ছে ৫৯৫ জনকে। ইতিমধ্যেই ৪২৮ জনকে ‘রেকমেন্ড’ করে একটা বড় অংশকে নিয়োগপত্র দিয়ে দেওয়াও হয়েছে। কিন্তু নিয়োগপত্র যাঁরা পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে প্রকৃত পদ অনুসারে যোগদানের উপযোগী মোটে ৬৮ জন। বাকিদের কারও পদ অনুসারে নিয়োগ হয়নি— এ কথা শিক্ষা দফতরের সূত্র থেকেই জানা গিয়েছে। সেই সমস্ত বিরাট সংখ্যাক শিক্ষকরা স্কুলে যোগ দিতে গেলে প্রধান শিক্ষকরা জানিয়ে দেন, স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে কনভার্সন করে দিলে তবেই তাঁরা সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের যোগদান করাবেন। সেই মতো স্কুল থেকে কনভার্সনের আবেদনও স্কুল পরিদর্শকের দফতরে পাঠানো হচ্ছিল ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে। কনভার্সন করে যোগদান করানোও হচ্ছিল কিছু ক্ষেত্রে।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপের বাসিন্দা তনুশ্রী পানিগ্রাহী কাপাসিয়া এএম হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে যোগদানের নিয়োগপত্র পান। সোমবার স্কুল পরিচালন সমিতি কনভার্সনের সিদ্ধান্তও নিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশের পর আর এ দিন তা স্কুল পরিদর্শকের দফতরে পাঠানো হয়নি। স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘রূপান্তর বেআইনি জানানোর পর আর পাঠানোর প্রশ্নই নেই।’’ তিনি জানান, তাদের স্কুলে চার জন উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষক পাঠানো হয়েছে। ইংরেজি, ভূগোল শিক্ষক পদ ফাঁকা নেই। বাংলার পদ আছে মাধ্যমিক স্তরে। ভৌতবিজ্ঞানের পদটিতে নিয়োগ ঠিক আছে। ওই শিক্ষকই তাই যোগ দেবেন।

ইটাহার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত নারায়ণ ধর বলেন, ‘‘এসএসসি থেকে ৫ জন শিক্ষককে পাঠালে যোগ দিতে দেওয়া হয়। স্কুল পরিদর্শকের নির্দেশ মেনে তাঁদের কনভার্সন করাতে হয়েছে।’’ তাঁদের জবাব, সে সব পদ মাধ্যমিক স্তরের ছিল। তা হলে আগে কী ভাবে যোগ দেওয়ানো হল, তার সদুত্তর মেলেনি। দুশ্চিন্তায় ভুগছেন সুমিত দাস, সৈকত পারিয়ারের মতো ওই স্কুলে নব নিযুক্ত ওই শিক্ষকেরা। গোয়ালপোখরের নন্দঝাড় আদিবাসী তফসিলি হাই স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নেই। সেখানে জীবনবিজ্ঞানের শিক্ষককে নিয়োগ করা হয়েছে। স্কুল তাঁকে এ দিন ‘রিফিউজ়াল লেটার’ দিয়েছে। তাই সম্বল করে শিক্ষা দফতরে আবেদন জানাবেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement