খোলা জায়গায় খাবার পরিবেশন করার সময় হাওয়ায় কিছু উড়ে এসে খাবারের পাত্রে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
স্কুল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মেলার মাঠে পাড়ায় পাঠশালার আয়োজন করেছে জলপাইগুড়ির একটি স্কুল। নিরিবিলি পরিবেশ। মাঠের আশপাশে আলুখেত, আলের ধার বরাবর সর্ষেগাছ। তাতে হলুদ ফুল ধরেছে। রান্না করা মিড-ডে মিল দিতে হবে শুনে চোখেও সর্ষেফুলই ভাসছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। মিড-ডে মিল রান্না হবে কোথায়? শিক্ষকদের একাংশ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, স্কুলে রান্না করে খাবার নিয়ে যাওয়া হবে মাঠে। কিন্তু এই ঠান্ডার দিনে নিয়ে যেতে যেতে খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে না? ঠান্ডা মিড-ডে মিলে শরীর খারাপ হবে না তো পড়ুয়াদের? আরও একটি প্রশ্ন। রান্না করা খাবার প্রতিদিন দেড় কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়ার খরচ কে জোগাবে?
গত বৃহস্পতিবার নির্দেশিকা জারির পরে বারবার ফোন গিয়েছে জেলা প্রশাসনে। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের তরফে যোগাযোগ করা হয়েছে প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে। তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে এই সব প্রশ্নের উত্তর। যা শুনে প্রশাসনের আধিকারিকেরা নাকি জানিয়েছেন, শিক্ষকেরা যা ভাল বুঝবেন, তাই করবেন। জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘পাড়ায় পাঠশালায় মিড-ডে মিল দেওয়ার সরকারি নির্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ বলে উল্লেখ রয়েছে। এর পরে আমাদের মন্তব্য করার এক্তিয়ার থাকে না। সফল ভাবে মিড-ডে মিল বিলির চেষ্টা হবে। সংশ্লিষ্ট স্কুল কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা জানা হবে।’’
প্রশ্ন রয়েছে আরও অনেক বিষয়ে। পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যবিধির কী হবে। খোলা জায়গায় পাড়ায় পাঠশালা চালানোর নির্দেশ এসেছে। সেখানে মিড-ডে মিল খাবার আগে-পরে পড়ুয়ারা হাত ধোবে কী করে। যে স্কুলের মাঠে পাড়ায় পাঠশালা হবে, সেখানে পড়ুয়ারা কি মিড-ডে মিল খাবার সময়ে স্কুলের ভিতর হাত ধুতে যেতে পারবে? খোলা জায়গায় খাবার পরিবেশন করার সময় হাওয়ায় কিছু উড়ে এসে খাবারের পাত্রে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
এমনই অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝাঁ বলেন, ‘‘এরই মধ্যে আগের মতো মিড-ড মিলের সামগ্রী বিলি করার জন্য সাবান, আলু সব কেনা হয়েছে। এক শিক্ষক জানতে চাইলেন, সেই সাবান এখন কী হবে? এর উত্তর আমার কাছে অন্তত নেই।’’