রায়গঞ্জের দেবীনগরের সুস্মিতা সরকার ডালখোলা হাইস্কুলে ভূগোল পড়ান, প্রায় একদশক ধরে। সুস্মিতার বক্তব্য, চাকরি পাওয়ার পর ছুটি বাদ দিয়ে প্রায় ৯ বছর ধরে রায়গঞ্জ থেকে বাসে চেপে ডালখোলা যাতায়াত করেছেন তিনি। প্রতিদিন যাতায়াত মিলিয়ে তাঁকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার বাসেই থাকতে হত। ফলে সেই সময় খুব হয়রানি ও সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে।
সুস্মিতার ছয় ও দেড় বছর বয়সী দুই মেয়ে রয়েছে। দ্বিতীয় মেয়ে হওয়ার পর থেকে এখন দুই মেয়েকে নিয়ে ডালখোলায় থাকছেন তিনি। তিনি জানান, স্কুলে শিক্ষিকাদের শৌচাগার ও প্রস্রাবাগারের অভাব রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে সেগুলি নিয়মিত সাফাই করা হয় না। ফলে বাসযাত্রার পরেও কী যে হয়রানি হত, তা বলে বোঝানোর ভাষা নেই তাঁর। সেই কারণে বাধ্য হয়েই ডালখোলায় চলে আসেন।
মালদহের গাজলের সুদীপ্তা বসু গোয়ালপোখর-২ ব্লকের সূর্যাপুর এলাকার বালুরবাঁধ জুনিয়র হাইস্কুলে ভুগোলের শিক্ষিকা। গাজল থেকে তাঁর স্কুল ১০৪ কিলোমিটার। তাই প্রতিদিন তাঁকে স্কুলে যাতায়াত করতে ২০৮ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়। সুদীপ্তার কথায়, ‘‘মেয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ওর পড়াশোনার জন্য স্কুলের আশপাশে বাড়িভাড়া নিয়ে থাকা সম্ভব নয়। তাই গত প্রায় ১০ বছর ধরে গাজল থেকে বাসে চেপে সূর্যাপুরে যাতায়াত করছি। প্রতিদিন প্রায় ছ’ঘণ্টা বাসে থাকার ফলে হামেশাই অসুস্থ বোধ করি। স্কুলে শিক্ষিকাদের পর্যাপ্ত শৌচাগার ও প্রস্রাবাগারের অভাব রয়েছে। সেগুলির পরিকাঠামোও বেহাল। ফলে বাসযাত্রার পরেও হয়রানি লেগেই থাকে।
উত্তর দিনাজপুর জেলা সর্বশিক্ষা মিশনের কোঅর্ডিনেটর সোমনাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দফতরের তরফে জেলার সমস্ত ব্লকের প্রাথমিক ও হাইস্কুলের শৌচাগারের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’