জমি নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়াতে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি শুরু করে দিল কংগ্রেস প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি। সম্প্রতি সংগঠনের শিলিগুড়ি শ্রমিক ভবনে চা শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক হয়। সেখানে তরাই-র ৩২টি বাগানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তথা কংগ্রেসের চা শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি অলোক চক্রবর্তী নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বাগান শ্রমিকদের জন্য আবাসনের সুষ্ঠু ব্যবস্থার দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিত আবেদন পাঠানো হচ্ছে।
উত্তরকন্যায় গিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে বিষয়টি জানিয়েছেন আইএনটিইউসি নেতারা। গত রবিবার শিলিগুড়ি জংশনের শ্রমিক ভবনে অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নিয়েও সম্মেলন হয়েছে। সেখানেও বাগান শ্রমিকদের বাসস্থান, রেশন, স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা হয়। অলোকবাবু বলেন, ‘‘বাগানের শ্রমিকদের সরকারি প্রকল্পে ২ টাকা কিলো দরে চাল দিচ্ছে রাজ্য সরকার। খুব ভাল উদ্যোগ। কিন্তু শ্রমিকদের তো শুধু খেলে চলবে না, ঘর-বাড়িও চাই। কিন্তু মালিকপক্ষের কোনও নজর নেই। তাই শ্রমিক আবাসনের ব্যবস্থা ঠিকঠাক করার দাবিতে আইএনটিইউসি লড়াই করবে।’’ তিনি জানান, বাগানের জমি তো রাজ্য সরকারের। মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জমির ব্যবস্থা করে আবাসন তৈরি বা সংস্কার করতে হবে।
বিধানসভা ভোটের দু’মাস আগেও অলোকবাবু জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। শ্রমিক সংগঠনও দেখভাল করতেন। পরে তিনি তাঁর পুরানো দল কংগ্রেসে ফিরে আসেন। গত সপ্তাহে জেলা আইএনটিইউসি চা বাগান শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠক ডাকে। সংগঠনের নেতারা জানান, জমি সমস্যার জন্য অনেক প্রকল্পেই সমস্যা হচ্ছে। সেখানে চা বাগানের জমি তো রাজ্য সরকারেরই। তা আবাসন বা শ্রমিকদের পাট্টা সরকারই দিতে পারে। এই জায়গায় দাঁড়িয়েই, বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আইএনটিইউসি চা বাগানগুলি জুড়ে নতুন করে সংগঠন বিস্তারের কাজে নামবে। গত বছর থেকে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি চুক্তির বিষয়ে রাজ্য নীতিগতভাবে রাজি হলেও পর পর বৈঠক চলছে। সম্প্রতি চা বাগান সংগ্রাম সমিতির পক্ষ থেকেও উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম কমিশনারকে স্মারকলিপি দিয়ে বিষয়টি দেখার দাবি তোলা হয়েছে। শ্রম দফতরের বৈঠকগুলিতে শ্রমিক প্রতিনিধিরা যাতে আরও ভাল ভাবে তৈরি হয়ে যোগ দিতে পারেন, তার জন্য জুলাই মাসে উত্তরবঙ্গের বাছাই করা নেতাদের নিয়ে কর্মশালার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইএনটিইউসি।