—ফাইল ছবি
টি বোর্ডের নির্দেশে ১৪ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ হচ্ছে চায়ের শীতকালীন উৎপাদন। তার আগে রাজ্যে চায়ের উৎপাদন অনেকটাই বাড়ল। গত বছরের তুলনায় চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যে চায়ের উৎপাদন বেড়েছে ৪.৩৭ মিলিয়ন কেজি। তরাই, ডুয়ার্স ছাড়াও বেড়েছে দার্জিলিং চায়ের উৎপাদনও।
বড় বাগানগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে উৎপাদন বাড়িয়েছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। তবে উৎপাদন বাড়লেও ততটা খুশি নন বড় বাগান মালিক বা ক্ষুদ্র চাষি কোনও পক্ষই। ক্ষুদ্র চা চাষিদের অভিযোগ, টি বোর্ড নির্ধারিত কাঁচা পাতার ন্যূনতম দামও পাচ্ছেন না তাঁরা। অন্য দিকে বড় বাগান মালিকদের বক্তব্য, যে ভাবে উৎপাদন বেড়েছে সে ভাবে বাড়েনি চায়ের দাম। অথচ বাগান পরিচালনার খরচ, শ্রমিকদের বেতন, বোনাস সব কিছুই বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
টি বোর্ড থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্যে মোট চা উৎপাদন হয়েছে ৫৫.০৯ মিলিয়ন কেজি। ২০১৮ সালে যার পরিমাণ ছিল ৫০.৭২ মিলিয়ন কেজি। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দার্জিলিং চায়ের মোট উৎপাদন ছিল ১ মিলিয়ন কেজি। চলতি বছর যা বেড়ে হয়েছে ১.১৫ মিলিয়ন কেজি। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে তরাই ও ডুয়ার্স চায়ের উৎপাদন ছিল যথাক্রমে ২০.৯৯ এবং ২৮.৭৩ মিলিয়ন কেজি। চলতি বছর সেই উৎপাদন বেড়ে তরাইয়ে হয়েছে ২২.৭৪ এবং ডুয়ার্সে ৩১.২০ মিলিয়ন কেজি। টি বোর্ডের কর্তারা বলছেন, তরাইয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভাবে সাফল্য পেয়েছে ক্ষুদ্র চা চাষিরা। চলতি বছর সেপ্টেম্বরে যেখানে তরাইয়ের মোট উৎপাদনের ১৬.৩২ মিলিয়ন কেজি চা এসেছে ক্ষুদ্র চাষিদের বাগান থেকে। সেখানে বড় বাগানের উৎপাদন মাত্র ৬.৪২ মিলিয়ন কেজি।
কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিজয় গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা ক্ষুদ্র চাষিরা চা শিল্পের উন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট আছি। তা সত্ত্বেও কাঁচা পাতার ন্যায্য দাম পাচ্ছি না। সেপ্টেম্বর মাসে জলপাইগুড়ি জেলার ক্ষেত্রে টিবোর্ড প্রতি কেজি কাঁচা পাতার দাম বেঁধে দিয়েছিল ১৩ টাকা ৬৫ পয়সা। অথচ আমরা গড়ে ১০ টাকা কেজি দরে পাতা বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি।’’
টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার তরাই শাখার সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘মোট উৎপাদন বাড়লেও চায়ের দাম বাড়েনি। অথচ উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই চায়ের দাম বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আমরা খুশি হতে পারছি না।’’
টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রভাতকমল বেজবরুয়া বলেন, ‘‘নিলামে চা বিক্রি পদ্ধতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। চায়ের দাম বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সেই প্রক্রিয়া অনেকটাই সহায়ক হবে। চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’