—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘শেষ ভাল যার সব ভাল তার’— প্রবাদ বাক্যটি ২০২৩ সাল শেষের পরে, উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের পরিস্থিতি নিয়ে বলা যায় কি না, চর্চা হতে পারে। কারণ, গত বছরের মরসুমের বেশিরভাগ সময়টাই চা পাতায় ঘাটতি উৎপাদন এবং মান পড়ে যাওয়ার আক্ষেপ শোনা গেলেও, ডিসেম্বরে উৎপাদন বেড়েছে। ডিসেম্বরের কাঁধে ভর করে, ডুয়ার্স এবং তরাই—দুই এলাকার চা বাগানের সারা বছরের উৎপাদন বেড়েছে। যদিও কমেছে দার্জিলিং চায়ের উৎপাদন। চা গবেষণা কেন্দ্র তথা টিআরএ-এর তরফে দাবি করা হয়েছে, গত অক্টোবরের পরে, দার্জিলিঙে বৃষ্টিপাত তেমন হয়নি। কার্যত ‘খরা’ পরিস্থিতি চলছিল পাহাড়ে, টিআরএ-র রিপোর্টে সে কারণেই উৎপাদন কমেছে।
তবে শেষ ভাল হলেই যে সব ভাল হবে, তা নিয়ে চা বলয় সন্দিহান। কারণ, উৎপাদন বাড়লেও চা পাতার গুনমান খুব একটা ভাল নয় বলে দাবি, তাতে চায়ের দাম উঠছে না। ছোট চা বাগানের উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় ডুয়ার্স এবং তরাইয়ে উৎপাদন বেড়েছে। কারণ। মোট উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি অংশ আসে ছোট চা বাগান থেকে। চা পর্ষদের রিপোর্ট অনুযায়ী, ডুয়ার্সে ২০২৩-এ মোট চায়ের উৎপাদন প্রায় পাঁচ কোটি ৮৯ লক্ষ কেজি। যা গত বছরের থেকে প্রায় দেড় শতাংশ বেশি। অন্য দিকে, তরাইয়ের বাগানগুলি মিলিয়ে গত বছর উৎপাদন হয়েছে দু’কোটি ২৭ লক্ষ কেজি পাতা। ২০২৩-এর থেকে দেড় শতাংশ বেশি।
দার্জিলিং চায়ের উৎপাদন ২০২৩ সালে ছিল ৪৯ লক্ষ কেজির কিছু বেশি, গত বছর উৎপাদন কমে হয়েছে প্রায় ৪৬ লক্ষ কেজি। প্রায় সাড়ে চার শতাংশ উৎপাদন কমেছে। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, “আবহাওয়ার খামখেয়ালিতে বছরভর উৎপাদনের সুসংহত ছবিটাই বদলে যাচ্ছে। ডিসেম্বরে বড় চা বাগানে খুব একটা বেশি উৎপাদন হয়নি। চায়ের জন্য গত বছর মোটের উপরে ভাল নয়।” যদিও ছোট চা বাগানগুলির সর্বভারতীয় পরিচালক মঞ্চের সদস্য বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “উৎপাদন বাড়লেও, চা পাতার মান খুবই খারাপ।”
চলতি বছরের পাতা তোলা শুরুর নির্দেশ দিয়েছে চা পর্ষদ। যদিও ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পেরিয়ে পাতা এবং কুঁড়ি—কোনওটিরও দেখা নেই বেশিরভাগ চা বাগানে।