বৃষ্টি শুরু হতেই ধানের চারা রোপণ আলিপুরদুয়ারের পোরোরপাড় এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
বৃষ্টি চলছেই। তাতে কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। ভুট্টা, বোরো ধান থেকে চা চাষে লাভ হচ্ছে বৃষ্টিতে। অন্য দিকে, ক্ষতি হচ্ছে আলু, তামাক ও আনাজে। কোচবিহারের একটি বড় অংশে আলু ও তামাক উৎপাদন হয়। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়েই চাষ হয় ভুট্টা ও বোরো ধান। কোচবিহার জেলার কৃষি দফতর সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এখনও চাষের ক্ষেত্রে বড় কোনও ক্ষতি হয়নি।
বৃষ্টিতে খুশি চা বলয়। মার্চ মাসের কয়েক দিনের বৃষ্টিতে চায়ের ‘দ্বিতীয় ফ্লাশ’-এর উৎপাদন ভাল হবে বলে দাবি করা হয়েছে। মাস চারেক ধরে বৃষ্টি না পেয়ে চা গাছ ঝিমিয়েপড়েছিল। চৈত্রের শুরু থেকেই বৃষ্টি চায়ের পক্ষে উপকারী হচ্ছে। বৃষ্টির ফলে, চা গাছে কুঁড়িও তাড়াতাড়ি আসবে বলে দাবি। তবে চা চাষে দিনে রোদ এবং রাতের তাপমাত্রা কম প্রয়োজন। বৃষ্টি বেশি দিন চলতে থাকলে দিনে পর্যাপ্ত রোদ পাবে না চা গাছ। সে ক্ষেত্রে চায়ের পক্ষে উল্টো প্রভাব পড়তে পারে।
আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় আলু চাষে ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ঋণ করে আলু চাষ করে কী ভাবে ঋণের টাকা শোধ করবেন, সেই চিন্তায় কৃষকেরা। সোমবার জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিভিন্ন জমিতে গিয়ে দেখা যায়, ছড়িয়ে রয়েছে আলু। শিলাবৃষ্টি ও বৃষ্টির জেরে মাটি ভিজে গিয়েছে। এরই মধ্যে আলুতে পচন ধরছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে মাথায় হাত কৃষকদের। এ দিকে সরকারি ভাবে আলুর দাম খুব একটা মিলছে না বলেও অভিযোগ তাঁদের একাংশের। সরকারি সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছেন কৃষকেরা।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলায় এখনও প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমি থকে আলু তোলার কাজ বাকি। টানা বৃষ্টি চলতে থাকায় জমিতে জল জমে সেই আলুর একটা অংশ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ দিন ফালাকাটা ও আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা সুমিত বসাক। তবে তিনি বলেন, “বৃষ্টি হলেও জমিতে জল জমছে না। ফলে। যে পরিমাণ আলু এখনও জমিতে রয়েছে, তার ক্ষতির আশঙ্কা নেই।”
আলিপুরদুয়ারের কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা জানান, বৃষ্টিতে মাটি রস পাচ্ছে। তাতে পাট চাষ ভাল হবে। বৃষ্টি ভুট্টা চাষেও উপযোগী হবে।