বোনাস-আন্দোলন নিয়ে আশঙ্কা পাহাড় পর্যটনে

বিনয়পন্থী মোর্চা, জন আন্দোলন পার্টি (জাপ), সিপিএম, তৃণমূল, সিপিআরএম, গোর্খালিগ, সব দলের চা শ্রমিক সংগঠন যৌথভাবে আন্দোলন শুরু করছে।

Advertisement

শুভঙ্কর চক্রবর্তী

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৯ ০১:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

পাহাড়ের চা বাগানের বোনাস নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে সোমবার। আর মঙ্গলবার থেকেই বাগানে বাগানে যৌথ আন্দোলন শুরু করল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলি। এ দিন পাহাড়ের প্রায় প্রতিটি বাগানেই গেট মিটিং করে বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। ষষ্ঠীর দিন থেকেই পাহাড়জুড়ে বড় আন্দোলন শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। পরের কর্মসূচি ঠিক করতে আজ, বুধবার দার্জিলিংয়ে বৈঠকে বসছে পাহাড়ের সমস্ত চা বাগান শ্রমিক সংগঠনগুলি। ইতিমধ্যেই বিনয় তামাং ঘোষণা করছেন সমস্যা না মিটলে ৬ অক্টোবর থেকে আমরণ অনশনে বসবেন তিনি। সব মিলিয়ে ভরা পর্যটন মরসুমে পাহাড়ে ফের জমছে অশান্তির মেঘ।

Advertisement

বিনয়পন্থী মোর্চা, জন আন্দোলন পার্টি (জাপ), সিপিএম, তৃণমূল, সিপিআরএম, গোর্খালিগ, সব দলের চা শ্রমিক সংগঠন যৌথভাবে আন্দোলন শুরু করছে। শ্রমিকদের বোনাসের দাবি ও আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে বিমলপন্থী মোর্চাও। দলের মুখপাত্র বিপি বজগাই বলেন, ‘‘বাগান মালিকরা শ্রমিকদের নায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করতে চাইছেন। শ্রমিকদের দাবির সমর্থনে আমরা গণতান্ত্রিক লড়াইয়ের পাশে থাকবো।’’ সিটুর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন, ‘‘টি বোর্ডের হিসেব অনুসারে গত বছরের তুলনায় এ বার দার্জিলিং চায়ের উৎপাদন ও বিক্রি ভাল হয়েছে। তা সত্ত্বেও শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরা ২০ শতাংশ হারেই বোনাস চাই।’’

কী ধরনের আন্দোলন হবে তা এখনও স্পষ্ট করেননি শ্রমিক নেতারা। বিনয়পন্থী মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি করুণা গুরুং বলেন, ‘‘যা পরিস্থিতি তাতে এ বারই প্রথম বোনাস ছাড়া পুজো কাটাতে হবে শ্রমিকদের। পেটে ভাত না থাকলে শ্রমিকরা যে কোনও ধরনের আন্দোলন করতে পারেন।’’ মহালয়া থেকেই দেশ, বিদেশের পর্যটকরা পাহাড়ে আসতে শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে বোনাস সংক্রান্ত আন্দোলন নিয়ে অশান্তি শুরু হলে পর্যটনে তার প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। দার্জিলিং অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্রাভেল এজেন্টসের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ লামা বলেন, ‘‘বোনাস নিয়ে এই ঝামেলা আগে কোনওদিন হয়নি। দ্রুত প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিয়ে সমস্যা সমাধান করা উচিত।’’

Advertisement

২০ শতাংশ বোনাসের দাবি তুলেছেন জিটিএর চেয়ারম্যান অনীত থাপাও। তিনি বলেন, ‘‘মালিকদের একগুঁয়ে মনোভাব দুর্ভাগ্যজনক। তাঁদের উচিত ২০ শতাংশ বোনাসের দাবি দ্রুত মেনে নেওয়া। নইলে আন্দোলন হবে।’’ দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা বোনাস নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বুধবার কলকাতায় রাজ্য সরকার গঠিত টি অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলের বৈঠক বসেছিল। সেখানে উপস্থিত না থাকলেও বোনাস সমস্যা নিয়ে একটি নোট কাউন্সিলে পাঠিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন কাউন্সিলের সদস্য ও পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মোহন শর্মা বলেন, ‘‘কাউন্সিল বোনাস নিয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। আমরা সার্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement