Tea Garden

অতিবৃষ্টির জেরে বাড়ছে না চা পাতা, চিন্তায় বাগান

অতিবৃষ্টির ফলে চা পাতার গুণমান যে ভাল হবে না তা মেনে নিচ্ছেন চা উৎপাদকেরা। সে কারণে কাঁচা পাতার দামও পড়ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৩ ০৮:৫১
Share:

কালচিনি ব্লকের মেচপাড়া বাগানে পানা নদীর জল প্রবেশ করায় তৈরি হয়েছিল বন্যা পরিস্থিতি। ছবি: সৌম্যদ্বীপ সেন

মাস খানেক আগেই বৃষ্টির অভাবে চা গাছের পাতা নেতিয়ে পড়েছিল। এখন অতিবৃষ্টির ভার সামলানোই দায় হয়ে পড়ছে। প্রবল বৃষ্টিতে রোদের দেখা না পেয়ে, চা পাতার বৃদ্ধি থমকে গিয়েছে। সে সঙ্গে দিন কয়েক আগে, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বাগানের মাটিও নরম হয়ে ধসে যাচ্ছে। তরাই এবং ডুয়ার্সের বেশ কিছু চা বাগানে প্রবল ভাঙন দেখা দিয়েছে। মরসুম শুরুর পরে, এখনও পর্যন্ত চা বাগানের পিছু ছাড়েনি সঙ্কট। চা মহল্লার অভিজ্ঞদের দাবি, এ বছরে একের পরে এক দুর্যোগ এসেছে চা শিল্পে।

Advertisement

অতিবৃষ্টির ফলে চা পাতার গুণমান যে ভাল হবে না তা মেনে নিচ্ছেন চা উৎপাদকেরা। সে কারণে কাঁচা পাতার দামও পড়ছে। এক কেজি কাঁচা পাতার দাম এসে ঠেকেছে ১২ থেকে ১৩ টাকা দরে। তার পরেও কাঁচা পাতা থেকে জল বাদ দেওয়া হয়। তার পরে দাম এসে কেজি প্রতি আট থেকে ন’টাকায় নামে বলে দাবি। অতিবৃষ্টির কারণে উৎপাদনও কমেছে।

চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পাণ্ডে বলেন, “এ বছর আবহাওয়ার খামখেয়ালে চা পাতায় চরম ক্ষতি হল। প্রথম ফ্লাশের সময় থেকে আবহাওয়ার সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। দ্বিতীয় ফ্লাশের শুরুতে তাপমাত্রা অত্যন্ত চড়া ছিল। এখন আবার বৃষ্টি প্রবল। সবেতেই ক্ষতি হচ্ছে চা উৎপাদনের।”

Advertisement

জুন-জুলাই মাসে দ্বিতীয় ‘ফ্লাশ’-এর চা পাতা মেলে। এই সময়ে প্রতি বছরই উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি থাকে। এই সময়ে রোদ-বৃষ্টি উভয়ই প্রয়োজন চায়ের বৃদ্ধিতে। তবে দুটোর কোনওটা এক টানা হলে, চা গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়। জুনের শুরুতে এ বার বৃষ্টি দেখেনি উত্তরবঙ্গ। চরম তাপপ্রবাহে চা পাতা গাছেই ঝলসে গিয়েছিল। তাতেই কমেছিল উৎপাদন। জুনের মাঝামাঝি আবহাওয়ায় ভারসাম্য ফিরলেও, তার পরে এবং জুলাইয়ের শুরু থেকে টানা বৃষ্টিতে ফের বির্পর্যস্ত চা উৎপাদন। অন্তত ৩০ শতাংশ উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে জুলাইয়ে।

বৃষ্টির সঙ্গে রয়েছে ভাঙনেরও সমস্যা। তরাইয়ের দাগাপুর চা বাগানের কারখানা পঞ্চনইয়ের ভাঙনে তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে দাবি। নিউ চামটা, নিশ্চিন্দপুর, পাহাড়গুমিয়া, তাইপো, বেলগাছি, ত্রিহানা চা বাগানে ভাঙন চলছে। ডুয়ার্সের মেচপাড়া, দলগাঁওয়ে ভাঙন বেড়েছে, রায়ডাক, গোপালপুর, চেংমারি চা বাগানেও ভাঙন চলছে। ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, “একে অতিবৃষ্টিতে ভাঙন, তার উপরে পাতার উৎপাদন কম— দু’ভাবেই চা বাগানে বিপদ বাড়ছে।”

ছোট চা বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “সবচেয়ে বিপদে ছোট চা বাগান। চা পাতার দাম পাচ্ছি না। এই পরিস্থিতিতে কী করণীয় তা ঠিক করতে, বৈঠক ডাকা হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement