কাজ করে: মাঝেরডাবরি চা বাগানে শ্রমিকেরা। ছবি: নারায়ণ দে
শ্রমিক সংগঠনের শক্তি ক্রমশ ‘হ্রাস’ পেতে থাকায় চা বলয়ে বন্ধ নিয়ে সে ভাবে প্রচার করা যায়নি বলে বুধবারই মেনেছিলেন বাম-ডান শ্রমিক সংগঠনের একাধিক নেতা। তার জেরে বৃহস্পতিবার কার্যত স্বাভাবিক কাজকর্ম হতে দেখা গেল আলিপুরদুয়ারের বেশিরভাগ চা বাগানে। একই ছবি ছিল জলপাইগুড়িতেও। বন্ধে চা বাগানের এমন পরিস্থিতি দেখে তার কৃতিত্বের দাবি তুললেন আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল ও বিজেপির নেতারা।
করোনা আবহে আলিপুরদুয়ারের চা বাগানগুলিতে বন্ধের প্রভাব কতটা পড়ে, এ দিন সে দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেরই। কিন্তু সকাল থেকেই আলিপুরদুয়ারের অনেক চা বাগানে স্বাভাবিক কাজ হতে দেখা যায়। কয়েকটি বাগানে অবশ্য কাজ বন্ধ ছিল। কয়েকটিতে শ্রমিকদের উপস্থিতি কম ছিল। তবে ইউটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি নির্মল দাসের দাবি, চা বাগানে বন্ধ সফল। সিটুর আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ গুন বলেন, “সব বাগানে আমাদের ইউনিয়ন শক্তিশালী নেই। যেখানে শক্তিশালী সংগঠন ছিল, সেখানে বন্ধ হয়েছে।”
চা বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়নের সহ-সভাপতি অসীম মজুমদারের অবশ্য দাবি, “আলিপুরদুয়ারের বেশিরভাগ চা বাগানে একমাত্র আমাদের ইউনিয়ন রয়েছে। আর আমাদের সংগঠনে থাকা শ্রমিকেরা কখনওই কর্মনাশা বন্ধের সমর্থক নন। তাই তাঁরা ধর্মঘটে সামিল হননি।”
অন্য দিকে বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার দাবি, “চা শ্রমিকেরা জানেন, বিজেপি সরকারই তাঁদের সমস্যার সমাধান করতে পারবে। তাই বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বন্ধে তাঁরা সাড়া দেননি।”
জলপাইগুড়িতেও এ দিন অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল চা বাগান। চা বলয়ের দোকান-বাজার বন্ধ থাকলেও চা বাগানে কাজ হতে দেখা গিয়েছে। কয়েক দিন পরেই চা বাগানে পাতা তোলা বন্ধ হয়ে যাবে। তার আগে এক দিন চা পাতা তোলা বন্ধ থাকুক, করোনা-কালে ক্ষতির পরে তা শ্রমিক নেতাদের অনেকেই চাননি বলে খবর।
চা মালিকদের সংগঠন আইটিপিএ-এর দাবি, তাদের সদস্য বাগানগুলির মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে পূর্ণ বন্ধ হয়েছে। বাকিগুলিতে স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। চা বাগান মালিকদের সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ সিসিপিএ-এর আহ্বায়ক অমিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, “কিছু চা বাগানে কাজ না হলেও, বাকিগুলিতে স্বাভাবিক ভাবেই কাজ হয়েছে। শ্রমিকরা নিজেরাই কাজে এসেছিলেন।”
বন্ধের মিশ্র প্রভাব পড়ে ডুয়ার্সের ধূপগুড়ি ব্লকের গয়েরকাটা চা বাগানে। সকাল থেকেই চা বাগানের বিভিন্ন অংশে চলে পাতা তোলার কাজ। সচল ছিল কারখানাও। তবে ডুয়ার্সের বানারহাট, হলদিবাড়ি, গ্যান্দ্রা পাড়া চা বাগানে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেননি বলে দাবি শ্রমিক নেতাদের। হলদিবাড়ি চা বাগানের কারখানা, শ্রমিক মহল্লা ছিল সুনসান।