সবুজ: এমনই নানা চা বাগান ঘোরাবে পর্যটন দফতর। নিজস্ব চিত্র
ডুয়ার্সের জঙ্গল, দার্জিলিং পাহাড় আর ‘দু’টি পাতা একটি কুঁড়ি’। রাজ্য সরকার এ ভাবেই উত্তরবঙ্গের প্রকৃতির সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছে তাদের নতুন চা পর্যটনকে।
বঙ্গদর্শন প্রকল্পের আওতায় রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগম চালু করতে চলেছে চা বাগানকে নিয়ে তাদের এই নিজস্ব প্যাকেজ। রেলে আইআরসিটিসি দীর্ঘ দিন ধরে ‘ভারতদর্শন’ নামে একটি প্রকল্প চালায়। ট্রেন ভাড়া করে তারা পর্যটকদের দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরিয়ে দেখান। সেই পথে হেঁটেই নিজস্ব আয় বাড়ানোর রাস্তায় নেমেছে পর্যটন দফতর। এর আগে পুরীকে ঘিরে তৈরি হয়েছে একটি প্যাকেজ।
পর্যটন দফতরের অফিসারেরা জানান, এত দিন পর্যটন উন্নয়ন নিগমের মাধ্যমে শুধু লজ বা অতিথি নিবাস তৈরি করে তা চালানো হচ্ছিল। এখন ৩৪টি লজ চলছে। রাজ্যে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেই নিগমের কাজকর্মের পরিধি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। তাতে নিজেরা প্যাকেজ ট্যুর করানোর পরিকল্পনা অন্যতম। নিজেদের অতিথি নিবাস রয়েছে, এমন এলাকা বাছাই করে যুক্ত করা হয় পর্যটকদের আকর্ষণকে। দিনভর গো ফিসিং, সুন্দরবন, বিষ্ণপুর, ঝাড়গ্রাম বা কলকাতা নিয়েও প্যাকেজ হয়েছে। এ বার বাসে করে ঘোরানোর প্রকল্পের জন্য ৫টি ভলভো বাসও আনানো হয়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলির মতো করে কলকাতা থেকেই প্রতিটি ট্যুর করাবে নিগম।
পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘নিগমের আয় বাড়াতে নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাসে প্যাকেজ ট্যুর এর অন্যতম।’’ মন্ত্রী জানান, পুরী বাঙালির কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাই প্রথমে তাকে বাছা হয়। এ বার উত্তরবঙ্গের চা বাগান, জঙ্গল ও পাহাড়কে নিয়ে প্যাকেজ তৈরি হল। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ বঙ্গদর্শন প্রকল্পে মধ্যে সব থাকছে। ধীরে ধীরে প্যাকেজগুলি কোনটা কত জনপ্রিয় হচ্ছে, তা দেখে এগোনো হবে।
দফতর সূত্রের খবর, গত কয়েক বছরে নিগম বছরে ৩-৪ কোটি টাকার বেশি লাভের মুখ দেখেনি। এ বার মার্চের শেষে ১০ কোটি ছাড়াবে বলেই অফিসারদের আশা। তাই মার্চের শেষেই ‘টি চিয়ার্স’ চালু করা হচ্ছে। পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে জঙ্গল এবং পাহাড় দু’টি আলাদা ট্যুরও থাকছে। ব্রেকফাস্ট, হোটেলে থাকা, বাস, গাড়িতে ঘোরানোর জন্য ৭ হাজার টাকা মাথা পিছু ধরা হয়েছে। ৫ দিনের প্যাকেজে কলকাতা থেকে ৪৬ জন পর্যটক দ্বিতীয় দিনে বহরমপুর, রায়গঞ্জ অতিথি হয়েছে শিলিগুড়িতে পৌঁছবেন। এর পরে ছোট বাসে ডুয়ার্স এবং পাহাড়ের দল আলাদা হবে।
ডুয়ার্সের ক্ষেত্রে জলদাপাড়া, গরুমারা, চাপড়ামারি সাফারি সঙ্গে থাকবে সামসিং-এ চা বাগানের ঘোরা, পাতা তোলা এবং চা পাতা তৈরির প্রক্রিয়া দেখার ব্যবস্থা। পাহাড়ের ক্ষেত্রে দার্জিলিং, কার্শিয়াং ও কালিম্পং ঘোরার সঙ্গে বিখ্যাত মকাইবাড়ি বাগানে যাবেন পর্যটকেরা। দু’দিনের সফরের পর দু’দল ফের শিলিগুড়ি এসে কলকাতায় রওনা হবে। নিগমের এমডি চিন্না মুরুগণ জানান, পর্যটকেরা নিগমের অতিথি নিবাসেই থাকবেন।