Suvendu Adhikari at Jalpaiguri

‘নড়বড়ে’ জায়গায় দলে লোক নিতে ছুতমার্গ নয়, বার্তা

বিরোধী দলনেতার সভার জন্য মেখলিগঞ্জ বিধানসভাকে বেছেও নেওয়া হয়েছিল এই কারণেই। মাসখানেক আগে, শুভেন্দু সভা করেছিলেন চা বলয়ের চালসায়।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৫
Share:

শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা আসন হাতছাড়া হওয়া রুখতে মরিয়া বিজেপির যোগদান নিয়ে আপাতত তেমন কোনও ছুতমার্গ নেই, দলের অন্দরে এমনই বার্তা দিয়ে গিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। শুক্রবার জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অর্ন্তগত কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে সভা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। সূত্রের খবর, সে সভার পরে দলের নেতাদের শুভেন্দু বার্তা দেন, বিরুদ্ধে তেমন ‘গুরুতর’ অভিযোগ না থাকলে যাঁরা দলে যোগ দিতে চাইছেন, তাঁদের যেন নিয়ে নেওয়া হয়। বিজেপি সূত্রের দাবি, আগামী লোকসভা ভোটে মেখলিগঞ্জ আসনে দলের ফলাফল যে ভাল হবে না দলের অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে উঠে এসেছে।
শুধু মেখলিগঞ্জ নয় জেলার চারটি বিধানসভায় দল ‘নড়বড়ে’ অবস্থানে রয়েছে বলে সূত্রের দাবি। সে প্রেক্ষিতেই এই বার্তা বলে মনে করছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ।

Advertisement

বস্তুত, বিরোধী দলনেতার সভার জন্য মেখলিগঞ্জ বিধানসভাকে বেছেও নেওয়া হয়েছিল এই কারণেই। মাসখানেক আগে, শুভেন্দু সভা করেছিলেন চা বলয়ের চালসায়। চা বলয়েও তৃণমূল হারানো শক্তি ফিরে পাচ্ছে পরিষ্কার হয়েছে গত পঞ্চায়েত ভোট এবং ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে। মেখলিগঞ্জের পরে, জলপাইগুড়ি লোকসভা ক্ষেত্রে শুভেন্দুর সভা হওয়ার কথা ধূপগুড়িতে। যেখানে সদ্য উপনির্বাচনে বিজেপির থেকে আসন ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। জেলার যে বিধানসভাগুলিতে বিজেপি পিছিয়ে রয়েছে, সেখানে সভা করে সাংগঠনিক ‘ফাঁক’ ভরাট করার চেষ্টা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও তাতে কতটা কাজ হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ, শুক্রবার মেখলিগঞ্জের সভায় ভিড় হলেও, লোকসভা ভোট নিয়ে কর্মীদের কতটা ‘চাগিয়ে’ দেওয়া গিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলেই।

সূত্রের খবর, বিজেপির সাম্প্রতিক অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে মেখলিগঞ্জ, রাজগঞ্জ এবং মালবাজার আসনে দল ‘পিছিয়ে’ থাকবে বলে উল্লেখ রয়েছে। সে তালিকায় সংযোজন হয়েছে ধূপগুড়ির। বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ের পরে, মহকুমা ঘোষণার খুশিতে সেখানে তৃণমূলের পাল্লা ভারী বলে মনে করছেন বিজেপি নেতাদের অনেকে। সে ক্ষেত্রে জলপাইগুড়ি লোকসভার সাতটি বিধানসভা আসনের মধ্যে চারটিতেই দল পিছিয়ে। এই পরিস্থিতি থাকলে, লোকসভা আসন ধরে রাখা সমস্যা বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সে কারণেই পিছিয়ে পড়া এলাকায় বার বার সভা করতে আসতে হচ্ছে রাজ্য নেতাদের।

Advertisement

তাতেও কতটা ফল মিলবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, মেখলিগঞ্জের সভায় বিরোধী দলনেতার মুখে ‘নতুন’ কোনও আশ্বাস বা লাইন শোনেনি জেলার কর্মী-সমর্থকেরা। শুভেন্দু চা বাগানের শ্রমিকদের জমির পাট্টার পরিবর্তে মালিকানা দাবি করেছেন, তাতে চা বলয়ে প্রভাব পড়লেও মেখলিগঞ্জে কী ফল মিলবে, প্রশ্ন রয়েছে বিজেপি নেতাদের। সব বুঝেই, ‘ঘর’ বাঁচাতে দলে যোগদানের ক্ষেত্রে নাক উঁচু ভাব না রাখার বার্তা দিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু, দাবি বিজেপি সূত্রের।

বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “তৃণমূল-সহ অনেক দলের নেতারাই যোগাযোগ করছেন। সে সব বিষয়ে রাজ্য নেতারা, মণ্ডল কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। জেলায় ফের সভা করবেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতার। চা বাগান নিয়েও সভা করবেন তিনি।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপের কটাক্ষ, “এখনই ভোট হলে, বিজেপি জলপাইগুড়ি লোকসভার সাতটির মধ্যে কোনও বিধানসভাতেই এগিয়ে থাকতে পারবে না। বিজেপি
যে হারছে, তা ওদের দলের নেতারাও বুঝে গিয়েছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement