নিম্ন অসমে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে।
লাগোয়া অসমে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের (জেই) প্রকোপ নিয়ে উদ্বেগ ছিলই। তারমধ্যেই মিজোরাম থেকে জ্বর নিয়ে ফেরার পর তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ‘ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়া’য় আক্রান্ত হয়েই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। যার জেরে জ্বরের লক্ষ্মণ নিয়ে ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরার পর জেলার হাসপাতালে কোন রোগী ভর্তি হচ্ছেন কি না সে ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। ভিন্ রাজ্য থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফিরলে, তাঁদের অসুস্থতার তথ্য সংগ্রহ করতে ব্লকগুলিকে বলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, মৃত ওই যুবকের নাম মিঠুন ওরাওঁ। তিনি কাজের সূত্রে মিজোরামে ছিলেন। সেখান থেকেই অসুস্থ হয়ে তুফানগঞ্জ মহকুমার রসিকবিল এলাকার বাড়িতে ফিরেছিলেন। পরিবারের লোকেরা ওই যুবককে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করালে রবিবার সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। কোচবিহারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সোরেন বলেন, “আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই যুবক তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কাজের সূত্রে তিনি মিজোরামে থাকার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানা গিয়েছে। ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ায় তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন বলেই প্রাথমিক কিছু রিপোর্টের ভিত্তিতে অনুমান করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, ভিনরাজ্য থেকে আসা রোগীদের ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।
কোচবিহার জেলা অসম সীমানা লাগোয়া তুফানগঞ্জ, তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা অসমের কাছে। সেখানকার বাসিন্দারা তো বটেই নানা কাজে জেলার প্রচুর মানুষ ওই রাজ্যে নিয়মিত যাতায়াত করেন, কাজের সূত্রে থাকেন। তাছাড়া অসমের নানা এলাকা থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোগীদের কোচবিহারে চিকিৎসার জন্য আসার নজির রয়েছে। তাই নিম্ন অসমে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়তেই ওই দুটি ব্লকে নজরদারি বাড়াতে জোর দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশিকা দেওয়া হয়। কোচবিহার ২ ব্লকেও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার দাবি, অসমের কিছু এলাকা আলিপুরদুয়ারের সীমানা ঘেঁষা। কোচবিহার ২ ব্লকের কিছু বাসিন্দা ওই রুটে অসমে যাতায়াত করেন। তাই ওই ব্লকেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছিল। মিজোরাম থেকে অসুস্থ হয়ে ফেরার পর ওই যুবকের মৃত্যুর জেরে সেটাই জোরদার করা হয়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের এক আত্মীয়ও জ্বর নিয়ে অসুস্থ হয়ে তুফানগঞ্জ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তার মধ্যেও ম্যালিগন্যান্ট ম্যালেরিয়ার লক্ষ্মণ ছিল। তিনি অবশ্য সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। মৃতের বাড়ির এলাকায় বাসিন্দাদের অনেকের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা হয়। তবে উদ্বেগের মতো কোনও ব্যাপার নেই। ডেঙ্গি নিয়েও একইভাবে সতর্কতা নেওয়া রয়েছে।