এ বার সুরেশ পূজারী।
একের পর এক বিজেপি নেতা উত্তরবঙ্গে এসে প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার লাটাগুড়িতে এসেছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এ দিন তিনি রয়েছেন শিলিগুড়িতে। শুক্র ও শনিবার জলপাইগুড়িতে ছিলেন দলের আর এক কেন্দ্রীয় নেতা শাহনওয়াজ হুসেন। আর রবিবার জেলায় এলেন সুরেশ পূজারী। মূলত নন্দনপুর বোয়ালমারীতে দলবদলের সভায় যোগ দিতেই বিজেপির এই কেন্দ্রীয় নেতার জলপাইগুড়িতে আসা৷ তবে তার আগেই সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কড়া সমালোচনা করেন তিনি৷
সুরেশের মতে, রাজ্যের তৃণমূল সরকার আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে৷ ভবিষ্যতে এ রাজ্যে এই সরকারের আর ক্ষমতায় আসার সম্ভবনা নেই৷ তিনি বলেন, ‘‘একটা প্রবাদ রয়েছে, বিনাশকালে বিপরীত বুদ্ধি৷ রাজ্যের তৃণমূল সরকারের এখন সেই দশা৷ সে জন্যই তারা কেন্দ্রের যে কোনও সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে ঝাঁপিয়ে পড়ছে৷ কেন্দ্র লালবাতি সংস্কৃতি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতেই এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পারলে তার চারিদিকে লালবাতি লাগিয়ে ঘুরতে চাইছেন৷’’ তাঁর কথায়, ‘‘আসলে এই সরকার আত্মহত্যা করার দিকে এগোচ্ছে৷ এদের আর কাউকে মারতে হবে না৷’’
সুরেশের মতে, শিক্ষা-স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে অপরাধ, দুর্নীতি কিংবা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি— সব ক্ষেত্রেই রাজ্যের যতটা অবনতি হয়েছে, তা দেশের আর কোনও রাজ্যে হয়নি। তাঁর কথায়, প্রথমে কংগ্রেস ও পরে বামফ্রন্ট কোনও উন্নয়ন না করাতেই তৃণমূলকে এ রাজ্যের ক্ষমতায় এনেছিলেন মানুষ৷ কিন্তু তৃণমূলের শাসনে সব দিক থেকেই রাজ্যের অবনতি হয়েছে৷ এই পরিস্থিতির সুযোগ যে বিজেপি নেবে, তার ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যের সমস্যাগুলি নিয়ে আন্দোলন করে বিশ্বাসযোগ্যতা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি৷’’
দুর্নীতির প্রশ্নেও রাজ্যকে একহাত নিয়ে সুরেশ পূজারী বলেন, কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা রাজ্যে এলেও নিচুতলার মানুষ তার অনেক সুবিধাই পাচ্ছে না৷ এ প্রসঙ্গে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের কথা তুলে তিনি বলেন, এই প্রকল্পে শৌচাগার তৈরিতেও ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে রাজ্যে৷ ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতেও শৌচাগার তৈরি নিয়ে যে কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, সেই প্রসঙ্গও তোলেন তিনি৷
সুরেশের বক্তব্য, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্র তিন বছরের ক্ষমতায় থেকে মানুষের জন্য কী কী করেছে, তা মানুষের সামনে তুলে ধরবেন তাঁরা৷ পাশাপাশি তৃণমূল সরকারের সাত বছরের শাসনকালে রাজ্য কী পেল, আর কী হারাল, তা-ও তুলে ধরা হবে৷ মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলে রাজ্য সরকার তাদের সাত বছরের শাসনকালের হিসেব মানুষকে দিক৷’’
বিজেপি নেতারা জানিয়েছেন, এ দিন নন্দনপুর বোয়ালমারীর সভায় বামফ্রন্ট ও তৃণমূল থেকে প্রচুর মানুষ বিজেপিতে যোগ দেন৷ তার আগে ধাপগঞ্জের একটি সভাতেও অনেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন৷