বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
জেলায় দুই সভা থেকে তৃণমূলকে বিঁধলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মঙ্গলবার মাথাভাঙা ও তুফানগঞ্জে দু’টি সভা করেন তিনি। এ দিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘‘সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাগরদিঘির বিধায়ক যোগদান পর্বের পরে বলেছেন, সিপিএমকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন। বিজেপির তাই হবে। কিন্তু সিপিএমের মাত্র তিনটি রাজ্যে অস্তিত্ব আছে, আর বিজেপি কত রাজ্যে ক্ষমতায়। সিপিএমের সঙ্গে বিজেপিকে তুলনা করছেন!’’ ‘অভিষেক বাচ্চা ছেলে’ বলে কটাক্ষও করেন সুকান্ত।
মঙ্গলবার কিসান মোর্চার ডাকে মাথাভাঙা ২ ব্লকের বড় শৌলমারি পঞ্চায়েতের মাঠে ছিল পদযাত্রা ও কৃষক সমাবেশ। সেখানেই যান সুকান্ত। ওই সভায় রাজ্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বাংলার কৃষকদের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সরব হয় ভারতীয় জনতা কিসান মোর্চা। তাদের অভিযোগ, তৃণমূলের বক্তব্য, বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাকে আর্থিক ভাবে বঞ্চিত করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, বিজেপি শিবিরের বক্তব্য, কেন্দ্রের প্রকল্পগুলি রাজ্যে ঠিক ভাবে রূপায়ন করছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
ওই সভায় সুকান্ত বলেন, ‘‘এই সরকার রাজবংশী ভোটব্যাঙ্ক নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করলেও পাঠ্যপুস্তকে বঞ্চিত বীর চিলা রায়।’’ বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে পূর্ণাঙ্গ মর্যাদায় চিলা রায়ের ইতিহাস তুলে ধরা হবে বলে জানান তিনি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহকে নিশানা করে সুকান্ত বলেন, ‘‘বয়স হয়েছে, গুণ্ডামি বন্ধ করে বিশ্রাম নিন। দম থাকলে পুলিশি নিরাপত্তা ছাড়া বার হন, কর্মীরা বাকিটা দেখে নেবে।’’ পঞ্চায়েত তৃণমূলের সন্ত্রাস রুখতে কর্মীদের বার্তা দেন তিনি। এ দিন সভায় ছিলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ, কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকার, কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়, কোচবিহার জেলা কিসান মোর্চার মুরারিকৃষ্ণ রায়, শঙ্কর ঘোষ।
এ দিনই তুফানগঞ্জে বিজেপির হ্যান্ডলুম ও উইভার সেলের উত্তরবঙ্গ জ়োন সম্মেলনেও হাজির ছিলেন সুকান্ত। ছিলেন বিজেপির রাজ্য কনভেনর প্রবাল বিশ্বাস ও বিজেপি বিধায়কেরা। সুকান্ত তাঁতশিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘আপনাদের সরকারি সুবিধার জন্য আমি নয়াদিল্লি যেতে হয় যাব।’’ রাজ্য সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে নিশানা করেন তিনি। বলেন, ‘‘আমার, রবীন্দ্রনাথ ঘোষের গায়ে যে করোনা প্রতিষেধক ঘুরছে, সবই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া।’’
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল রাজ্য সহ-সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘সুকান্তআইনকানুন জানেন না। আমরা যে কর দিচ্ছি, সেখান থেকে টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেটা ভারত সরকারের টাকা। সবার মৌলিক অধিকার আছে। নরেন্দ্র মোদী বা সুকান্তর বাড়ির টাকা নয়। প্রতিষেধকও করের টাকা থেকে দেওয়া।’’