বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা বন্ধে প্রস্তুতি

এমন পরিস্থিতিতে পাল্টা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছেন শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের একাংশ। মঙ্গলবার থেকে তাঁরা একযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক করার দাবিতে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও অচলাবস্থা তৈরির আশঙ্কা করছেন শিক্ষক মহলের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০৪
Share:

অচল: এমনই পোস্টারে ছেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। নিজস্ব চিত্র

এক দিকে অস্থায়ী কর্মীদের টানা আন্দোলন। অন্য দিকে ইস্তফা দিয়েছেন উপাচার্য। পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিত্ত আধিকারিকও। তার জেরে সোমবারও অচলাবস্থা ছিল মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

Advertisement

এমন পরিস্থিতিতে পাল্টা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছেন শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের একাংশ। মঙ্গলবার থেকে তাঁরা একযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক করার দাবিতে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তার জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও অচলাবস্থা তৈরির আশঙ্কা করছেন শিক্ষক মহলের একাংশ।

২০ নভেম্বর থেকে টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যেরা। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে তাঁরা সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তারই দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চলছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শুভায়ু দাস। তিনি বলেন, ‘‘নায্য দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে। আমাদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলতে থাকবে।’’

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, অস্থায়ী কর্মীদের আন্দোলন শুরুর ২৪ ঘন্টা আগে, ১৯ নভেম্বর মালদহে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ‘মতবিরোধ’ হয়েছিল উপাচার্য স্বাগত সেন। তার পরেই শিক্ষামন্ত্রীর কাছে গিয়ে ইস্তফা দেন তিনি। এ সবের জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। আন্দোলনকারীদের একাংশ জানিয়েছেন, উপাচার্য ইস্তফা দেওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত আসছেন না ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরিও। এমন অবস্থায় গত ২৮ নভেম্বর ইস্তফা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিত্ত আধিকারিক ভাস্কর বাগচী। তিনি ই-মেলের মাধ্যমে রেজিস্ট্রারের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন। যদিও এখনও তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়নি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। ভাস্কর বলেন, “আমি আর বিত্ত আধিকারিকের দায়িত্ব চালাতে পারছি না। তা আগেই কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ইস্তফাপত্র পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে।” বিপ্লব বলেন, “শারীরিক অসুস্থার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছি না। আন্দোলনকারীদের বলা হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটাতে।” কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, টানা আন্দোলনে কোনও কাজই হচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে ইস্তফা দিতে চাইছেন।

অচলাবস্থার জেরে সমস্যায় পড়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রাখি দাস, পূর্ণিমা সরকার বলেন, ‘‘বিএডে ভর্তির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শংসাপত্রের প্রয়োজন। অথচ, দিনের পর দিন ঘুরেও মিলছে না শংসাপত্র। তা না মিললে বিএডে ভর্তিও হতে পারছি না।” গ্রন্থাগার খোলা থাকলেও বই বাড়িতে নিয়ে যেতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন পড়ুয়ারা।

এমন অবস্থায় পড়ুয়া, অভিভাবকদের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা আন্দোলনে নামতে চলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ‘‘লাগাতার আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। এমন চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গতি থমকে যাবে। যার জন্য সকলে মিলে পাল্টা আন্দোলন করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement