আপত্তি: জলপাইগুড়ির স্কুলে চলছে পোশাক নিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।
নিজেদেরই অভিভাবকদের নীল-সাদা পোশাক নিতে বাধা দিল পড়ুয়ারা। প্রতিবাদও জানাল তারা। শেষে প্রতিবাদে শামিল হলেন অভিভাবকেরাও। যার জেরে স্কুল থেকে নীল-সাদা পোশাক বিলির কাজই ভেস্তে গেল। একটি পোশাকও নিলেন না অভিভাবকেরা। জলপাইগুড়ির ফণীন্দ্রদেব ইনস্টিটিউশনে এমনই দেখা গেল বুধবার দুপুরে। অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র বলে, “দু’দিন আগে আমরা ক্লাসে সবাই মিলে সভা করেছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কেউ নীল-সাদা পোশাক পরব না, বাড়ি থেকে জোর করলেও পরব না।”
স্কুল থেকে জানানো হয়েছিল, এ দিন ছুটির সময়ে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের নীল-সাদা পোশাক দেওয়া হবে। সেই ঘোষণা মতো অভিভাবকেরা স্কুলে আসেন। স্কুলের একটি ঘরে পোশাক বিলি হবে বলে জানানো হয়েছিল। সেই ঘরের সামনে লাইন দেন অভিভাবকেরা। বিলি শুরু হতেই পড়ুয়াদের কয়েকজন মাঠের মাঝখানে এসে বলতে থাকে, “আমরা নীল-সাদা পোশাক পরব না। স্কুলের খাকি পোশাকই পরব।” শতাব্দীপ্রাচীন এই স্কুলের পোশাক হল খাকি রঙের প্যান্ট এবং সাদা শার্ট। দু’তিনজন পড়ুয়া স্কুলের পুরনো পোশাকই পরবে বলে চেঁচামেচি শুরু করতেই আরও পড়ুয়া চলে আসে। সেই দলে যোগ উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারাও। মাঠের মাঝখানে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ দেখে লাইনে দাঁড়ানো অভিভাবকদের কয়েকজনও নীল-সাদা পোশাক নেবেন না বলে জানাতে থাকেন। এর পরেই অভিভাবকেরা সকলে মিলে দাবি তোলেন, তাঁরা কেউ নতুন পোশাক নেবেন না। একজনও পোশাক নিতে সম্মত না হওয়ায় পোশাক বিলিই ভেস্তে যায়।
স্কুলের প্রধানশিক্ষক প্রকাশ কুণ্ড বলেন, “সরকারি নির্দেশে স্বনির্ভর গোষ্ঠী পোশাক বিলি করছিল। আমরা স্কুলের তরফে সেই তারিখ জানিয়েছিলাম। পড়ুয়ারা, অভিভাবকেরা যদি সেই পোশাক না নেয় তা হলে আমাদের কিছু করার অবকাশ নেই। সরকারি নির্দেশ মতো আমি তাঁদের পোশাক নিতে অনুরোধ করেছি।”
অভিভাবক সঞ্জয় দাস বলেন, “প্রয়োজনে কষ্ট করে হলেও নিজেদের খরচে খাকি-সাদা পোশাক বানিয়ে দেব। কিন্তু নীল-সাদা পোশাক পরে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাব না। তা ছাড়া আমার ছেলে বলেও দিয়েছে, জোর করলেও নীল-সাদা পোশাক পরে স্কুলে যাবে না। স্কুলের ঐতিহ্যের পোশাকই পরবে।” এ দিন পড়ুয়াদের সঙ্গে শ’খানেক অভিভাবক বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।