দক্ষিণ নারারথলি জুনিয়র হাইস্কুলে পড়ুয়াদের জন্য তৈরি হচ্ছে মোগলাই পরোটা। —নিজস্ব চিত্র।
পাতে পড়ল মোগলাই পরোটা, আর কাবলি ছোলার ঘুগনি। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম ব্লকের দক্ষিণ নারারথলি জুনিয়র হাই স্কুলের পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলে পাতে দেওয়া হল এমনই খাবার। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিক্ষক দিবস এবং রাখি বন্ধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে এ দিন স্কুলের শিক্ষকেরা এই আয়োজন করেছেন। এই প্রথম মিড-ডে মিলের পাতে মোগলাই ও ঘুগনি মেলায় যারপরনাই খুশি পড়ুয়ারা। আর ছাত্রছাত্রীদের পাতে সে খাবার তুলে দিতে পেরে তৃপ্ত শিক্ষকেরাও। শিক্ষকদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন অভিভাবকেরা।
জানা গিয়েছে, ২০০৮ সাল থেকে হাতেগোনা কয়েক জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে পথ চলা শুরু করে দক্ষিণ নারারথলি জুনিয়র হাই স্কুল। এই মুহূর্তে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪৫। এই স্কুলে মিড-ডে মিলের খাবার বরাবরই একটু ‘অন্য রকম’। স্কুলের মাঠেই জৈব সারে চাষ করা হয় বেগুন, স্কোয়াশ, পেঁপে, লঙ্কা-সহ একাধিক আনাজ। স্কুলেই উৎপাদিত সে আনাজ দিয়ে প্রতিদিন স্কুলের মিড-ডে মিল রান্না করা হয়। প্রথাগত শিক্ষার বাইরে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের যোগ ব্যায়াম, ক্যারাটে, নাচ, গানও শেখানো হয়।
এ বারেও শিক্ষক দিবস এবং রাখি বন্ধনে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় স্কুলে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই দুই অনুষ্ঠানের সময়ই স্কুলের শিক্ষকেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে প্রত্যন্ত এই এলাকার ছাত্রছাত্রীদের মোগলাই খাওয়ানো হবে। এ দিন রীতি মতো বাইরে থেকে রাঁধুনি এনে তৈরি করা হয় মোগলাই, কাবলি ছোলার ঘুগনি। মিড-ডে মিলের মেনুতে রাখা হয় সেই খাবারই।
জানা গিয়েছে, এই খাবার খাওয়াতে স্কুলের শিক্ষকেরা নিজেরাও কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেন। দুপুরে মিড-ডে মিলের পাতে মোগলাই পেয়ে খুশি স্মৃতি, সৃজা, কল্লোল, ভোলাদের মতো পড়ুয়ারা। পড়ুয়ারা জানিয়েছে, এর আগে স্কুলে একাধিক বার মিড-ডে মিলের পাতে পাঁঠার মাংস-সহ বিভিন্ন মেনু রাখা হয়েছিল। কিন্তু মোগলাই এই প্রথম।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিআইসি) প্রদীপ পণ্ডিত বলেন, “শিক্ষক দিবস এবং রাখি বন্ধনের অনুষ্ঠানে পড়ুয়াদের শুধু মিষ্টিমুখ করিয়েছিলাম। ওই অনুষ্ঠানের দিনগুলিতে আমরা শিক্ষকরা ভেবে রেখেছিলাম, যে এক দিন মোগলাই রাখা হবে মিড-ডে মিলের পাতে। এ দিন সে আয়োজন করা হয়েছিল। ভবিষ্যতেও আমরা পড়ুয়াদের মুখে এ ধরনের খাবার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করব।”