ফাইল চিত্র।
লকডাউনে স্কুল পড়ুয়াদের পড়ানোর জন্য ই-ক্লাস শুরু হলেও তার প্রভাব কতটা তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। একই স্মার্টফোন নেই, তার উপর রয়েছে নেট সমস্যা। এবং প্রথম দিকে উৎসাহ থাকলেও ক্রমে আগ্রহ কমায় ধীরে ধীরে ই-ক্লাসে পড়ুয়াদের উপস্থিতি কমছে বলেই জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা। যদিও হাল ছাড়েননি শিক্ষকরা। নিয়ম করে প্রতিদিন ভিডিয়ো তৈরি করে শিক্ষাদান করে চলেছেন তাঁরা।
মালদহ জেলা স্কুলের বাংলার শিক্ষক উত্তম গোস্বামী বলেন, ‘‘প্রথম দিকে যে সংখ্যক পড়ুয়া ভিডিয়ো দেখত, সেই সংখ্যা ক্রমে কমছে। তবে হাল ছাড়ছি না।’’
কিন্তু ই-ক্লাসের প্রতি পডুয়াদের আগ্রহ কমছে কেন?
শিক্ষকেরা জানালেন, স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশেরই স্মার্ট ফোনে ই-ক্লাস করার সামর্থ্য নেই। এমনিতে প্রায় ৪০ শতাংশ পড়ুয়া শুধু স্কুলে নাম লিখিয়ে রাখে, নিয়মিত স্কুলে যেতেই পারে না। কারণ তাদের অর্থ উপার্জনের জন্য কাজ করতে হয়। বাকি ৬০ শতাংশ পড়ুয়া স্কুলে নিয়মিত যায়। কিন্তু তাদের মধ্যে আবার ২০ শতাংশের পড়াশোনার প্রতি একটু কম আগ্রহ থাকে। শ্রেণিকক্ষের পরিবেশে পড়াশোনা করলেও বাড়ি থেকে ই-ক্লাস করার তাদের সে রকম তাগিদ নেই। তাই অনলাইনের পড়াশোনা এখনও পর্যন্ত মাত্র ৪০-৪৫ শতাংশ পড়ুয়ার কাছেই পৌঁছতে পেরেছে বলে জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা।
বংশীহারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক কানাই দত্ত বলেন, ‘‘প্রথম কয়েকদিন ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ ছিল। কিন্তু এখন খুব কম সংখ্যকের মধ্যেই সেই উৎসাহ রয়েছে।’’ কিন্তু নগন্য হলেও শিক্ষকরা নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত প্রত্যেকটি ক্লাসের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউবে ভিডিয়ো আপলোড করে এবং স্থানীয় টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে ক্লাস নিয়ে চলেছেন।
৩০ জুন পর্যন্ত স্কুলগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা দফতর। উত্তমবাবুর কথায়, ‘‘সুস্থ অবকাশ না থাকলে পড়াশোনা হয় না। লকডাউনের জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে অনীহা তৈরি হয়েছে। তবে আমার মনে হয়, আগামীদিনে ই-ক্লাসের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।’’